Selected static block was removed or unpublished
Track Order
0 0
0 My Wishlist

No products in the wishlist.

View Wishlist

0 ₹0.00 0
0 Shopping Cart
Shopping cart (0)
Subtotal: ₹0.00

View cartCheckout

বিভাগ
Array
Array
Log in / Sign up
My Account

Lost password?

Facebook Instagram LinkdIn Tumblr Telegram
0 0
0 My Wishlist

No products in the wishlist.

View Wishlist

0 ₹0.00 0
0 Shopping Cart
Shopping cart (0)
Subtotal: ₹0.00

View cartCheckout

Menu Categories
Array
  • ছোটগল্প ও রম্যরচনা
  • Best Seller
  • উপন্যাস
  • আলোপৃথিবী
  • নাটক ও সিনেমা
  • ডায়েরি ও জার্নাল
  • কবিতা
    • নির্বাচিত কবিতা
  • চিঠিপত্র
  • কবিতা সংগ্রহ
  • উজ্জ্বল উদ্ধার
  • Art Monograph
  • অনুবাদ
  • পত্রিকা
  • Film Script Translation
  • গদ্য ও প্রবন্ধ
  • কথকতা
  • Recipe Collection
  • সম্পাদনা
  • লাইফ peg
    • রান্না
    • কবিতা সংকলন
  • ফ্যাক্সিমিলি সংস্করণ
  • সাক্ষাৎকার
  • Prebook
  • স্মারক আলেখ্য
  • New Arrivals
Wishlist 0
Log in / Sign up
Facebook Instagram LinkdIn Tumblr Telegram

তপোব্রত মুখোপাধ্যায়

June 16, 2022 /Posted byaloprithibi / 0

কবিতা যেমন 

 

হারিয়ে ফেলার ঘরগুলো সব শ্যামের নামে বেঁধে রাখা শেষ হলে মনে পড়ল এমন কিছু মানুষের কথা, এমন কিছু সময়ের কথা, যেসব সময়, এবং সময়ানুগ মানুষ আমায় সময় চিনতে, সময় জুড়ে বেঁচে থাকতে, আর বাঁচার মধ্যে সত্যি কথায় তেঁতুল পাতায় একান্নজনের সংসার নিয়ে একটা সুতোয় বাঁধার যাপন শিখিয়েছে। সেসব যাপন সহজ নয়, সেসব যাপন কঠিনও নয়। সহজ আর কঠিন, এমন যাপনের ধরণ মেনে এগিয়ে যাওয়ার পর পিছন ফিরে নিজেকে দেখতে হয় না। ফেলে আসার কথা যেন আর আমায় ফেলে না যায়, এমন করে শিখিয়ে গেছে মানুষগুলো। তাদের নাম দেওয়াই যায়, কিন্তু নামে কি আর সব বোঝায়? কী-ই বা বোঝায়, সেসবও শিখিনি। এর মাঝে ফিরে গেছে মানুষেরা এসে। থেকে গেছে কিছু। বাকি আর কেউ এখনও আশেপাশে, রাস্তা হারিয়ে গেলে হাত ধরে পার করে দেবে। এসবের নাম নেই। শুধু থেকে যাওয়া। অথচ মাত্র এই থেকে যাওয়াটুকু আজ অবধি অভ্যাস হল না।

এমনটা কথা ছিল না যদিও। ছোট থেকে বাবা শিখিয়েছে চলে যেতে হবে, এবং চলে যাওয়া দেখাও এক সময় অভ্যস্ত হয়েছে। কিন্তু আমার মন বুঝিয়েছে আসলে যাওয়া বলে কিছু হয় না। ছেড়ে যাওয়াও আসলে থেকে যাওয়ারই নামান্তর। এই “যাওয়া” শব্দ সবখানে এক – “তোমার পায়ের পাতা সবখানে পাতা”। আমরা পায়ের ছাপ দেখে আসি, ফেলে আসি, আবার ছাপের কাছে ফিরি।

 

 

১।

ঠিক কোথা থেকে প্রথমের কথা শুরু হয়, সে কথা থমকে ভাবতে হলে অনেক সময় যাবে। সময় বেশিদূরে আসেনি এ অবধি, তবু যেখান থেকে ভিড় শুরু হল, জটলা বাঁধল জীবন, গন্ডীর বাইরে বেশ পা রাখার পর একটা একটা করে নতুন গন্ডী এলো, দরজা খুলল, সেই কথার কথা হোক তবে। এসব কথার খাতার পাতা সাদা থাকে বছর বছর, অনেকটা সময় পেরিয়েও হলুদ হবার নাম করে না।

 

স্কুল জীবন বলতে সেসব শুরু হয়েছিল অনেক আগে। সঠিক সময় মনে নেই, শুধু শ্যামনগরের এক একতলা বাড়ির গোটাখানা বাদে। সেখানাই স্কুল। সেইসময় কেমন ধারণা ছিল, স্কুল বলে (যে বানানখানা বেশী কঠিন) যাকে ডাকা হয়, তাতে তেমন কেউ সহজসরল রকমের মানুষজন থাকে না। সেসব বড়দের হয়তো। আর অন্যদিকে যেইখানাতে দিদিমণিরা নাম ধরে ডাকলে উত্তরে “হালুম” শুনেও কেউ ঘাবড়ে যাবে না, সেইটাই ইশকুল। এই ইশকুল ব্যাপারটায় যে কত মায়া আছে সেখানা বুঝিইনি চুল পাকবার আগে। ই-স্কুল-এর চাপে সেদিনের ইশকুল হারিয়ে যাবে কিনা কোনোদিন, কে জানে। সেসব দিনে দিদিমণিরা মায়ের মতো ছিলেন। মা বাড়ি ফিরে গেলে একা লাগবার কিছু ছিল না। গল্প ছিল অনেক। গল্পেরও গল্প ছিল। একটা বাড়ির জানলায় বড় বেদীর উপর বসে অভ্যাস হয়ে যেত রূপকথা শোনা। সেই থেকে অরূপসাগরে ডোবার প্রথম ইচ্ছে কিনা এখন বলা কঠিন।

 

যাই হোক, কথা যা হচ্ছিল, সেই একতলার বাড়িতে বড় বড় পাতা বেঞ্চ আর জানলায় চওড়া বসবার জায়গা। ঐসব দিদিমণিদের। বেঞ্চ সব আমাদের। তখন বাড়িতে না পাওয়া পাঊডারের ইচ্ছে-ভরসা মিটিয়ে রামভরসা হয়ে যেত চক। ও জিনিসটা মূলতঃ পছন্দ ছিল পাউডারের গুঁড়োর জন্য, এবং সেখানা দিয়ে সিংহ সাজলে মজা নেহাত কম হত না (সেযুগে পাউডার মাখা সিংহ এক জায়গাতেই পাওয়া যেত এবং তার জন্য সার্কাসের টিকিটও লাগত না)। এমন অবস্থায়, একবার হল যে, এক তৎকালীন খুদেকে দিয়ে এক বড় (একটু উঁচু ক্লাস, ক্লাস ওয়ান মনে হয়) ছাত্রের কানমলা-র শাস্তিবিধান করা হল। খুদে এলেন, প্রাণপণ চেষ্টা করেও কানে হাত পেলেন না। শেষে টুলে উঠে কাজ সেরে বিশ্ববিজয়ীর হাসি দিলেন (আলেকজাণ্ডার লজ্জা পেতেন আর কি)। সেদিনের মতো সব লাইমলাইট গিয়ে পড়ল খুদের উপর। এই খুদে নিজে পরের ক্লাসে (ক্লাস ওয়ানে) নিতান্ত শখে জলের বোতলে কাদাজল ভরে এনে জীবনের প্রথম বৈজ্ঞানিক চর্চা করলেন। পরবর্তী ফলশ্রুতি শুধু শ্রুতিতেই নয়, ফল হয়ে ভগবানের গাছেও ফলেছিল বোধহয়, সেইজন্য এদেশের ভাগ্যে বিজ্ঞানে কনিষ্ঠতমা নোবেলবিজয়ীর তকমা এ-অবধি মুলতুবি আছে।

 

এর পর স্কুল বদলে গেল অন্য পাড়ায়। সেপাড়ায় এক বেশ গম্ভীর মানুষ থাকতেন। বাড়ির সামনে দেবদারু গাছের একটা সারি, তার পাশে একটা সাদা গাড়ি সবসময় দাঁড়িয়ে থাকতো। গাড়িতে চড়লে যাদের অস্বস্তি হয় আর যে গাড়ি নিজে চালানো যায় না, মানে, নিজের মতো করে ঘরেদোরে যে গাড়ি নিয়ে ইচ্ছেমতো খেলা যায় না, তার দিকে আগ্রহ না থাকাই স্বাভাবিক। সেহেতুই মোটর দেওয়া খেলনার দিকে খুব একটা ইচ্ছে ছিল না কখনওই। কেনই বা থাকবে? সেসবে নিজের খেলার সুযোগ কোথায়? যাই হোক, সেসব জায়গায় গিয়ে দেখা হল অনেকের সাথে। মানে, তাদের আগেও দেখা গিয়েছিল, কিন্তু অপরিচয়ের বাঁধ ছিল বেশী। এর মধ্যে একজনের মামারবাড়ির জায়গার নামের সঙ্গে “লুঙ্গি” বিষয়খানার যোগ থাকতে তো প্রথমে হাসি আর পরে জায়গাটায় যাবার ইচ্ছে হত খুব। সে ইচ্ছে এযাবৎ পোষা থেকে তামাদি হয়ে গেছে।

 

আরেকজন মহা গম্ভীর। এমন গাম্ভীর্য সচরাচর লামাদের মুখে দেখা যায়। হাসবে নাকি কেঁদে ফেলবে ভাবতে ভাবতে বেলা গড়িয়ে ছুটির ঘণ্টা বাজার সময় চলে আসতো। সেসব বাদে আরও কিছুজন ছিল, যাদের বিষয়ে এখনও বলতে ভয় লাগে, এই এক্ষুনি এলো বলে — “তবে রে” বলে কষে ঝগড়া। আর সেই ভয় লাগলেই মনে হয়, নাঃ, সেদিনেই আছি। কোন সময় বদলায়নি, কেউ বদলায়নি। ফেরার পথের ইঁটের গলি, পুকুরপাড়, ঝুঁকে পড়া কাঁঠালগাছ, ফিরতে ফিরতে মোড় ঘুরতে লাইটপোস্টের তলা দিয়ে এই কেউ চলে যাবে সাইকেল নিয়ে। সন্ধ্যেবেলা মা যাবে হোমটাস্ক জানতে, বোর্ড দেখতে পাইনি বলে কিচ্ছু সেসব লিখতে পারিনি। সন্ধ্যে পেরিয়ে গেলে রাতে সবাই ঠাকুর নমস্কার করে শুতে বললে, সবার আগে সেই বলাটাও থাকবে, কাল যেন সবার মত হোমটাস্ক লিখে আনতে পারি। তারপর একদিন বাবা খানিক দূরে বই রেখে পড়তে বলবে, আর ভুল কোথায় হচ্ছে কিছুই বুঝতে না পারার দিনটা আসবে। তারপরে যেদিন চশমা পরে প্রথম স্কুলে ঢুকবো, কারা কারা যেন কত কি বলবে, আর ভুলেই যাবো চোখে একটা চশমা রয়েছে। ঠিক এভাবেই দেখতে দেখতে কতগুলো দিন পেরিয়ে গেল, কিচ্ছু তো ঝাপসা হয়নি। সেখান থেকে ঝাপসা হয়নি এমনকি নতুন স্কুলের কথা। সে স্কুলে আর দিদিমণি ছিল না। সেই স্কুল থেকে ছেলে-মেয়ে সব্বাই আলাদা হয়ে গেল। সমাজে লিঙ্গভেদ ছোট থেকে শিখিয়ে মানুষকে চেনানো হয় এই শ্রেণী আলাদা, ওই শ্রেণীর সঙ্গে মিশলে গোপনীয় বিষয়ের পর্দা রাখা দরকার।

 

এসব একালের প্রতি দিনের কথা। সে কথার গায়ে আগে-পরে অনেক কিছুর মতো আরও কথা উঠে আসে এত এত বছরের পরে। যেসব চেনা কথা এতদিন পরে এসে বোঝা যায়, তাদের পুরনো হওয়ার গল্প শুধু আজকের রাত পেরিয়ে কালকের সকালে ফের গত দিনটার সকালের কথা মনে পড়বার মতো। পিছন ফিরে নয়, এই যে সামনে তাকিয়ে থেকে লিখে যাচ্ছি, এর সবটুকু, সব শব্দ, সব দিন, সবটা সময় সামনে থেকে দেখতে পাচ্ছি। এতদিন ধরে চলে আসা যত কথা, যত না হওয়া শব্দেরা, ঘটমান প্রতি বর্তমানে সবাই আমার সঙ্গে আছে, কাঁটায় কাঁটায় আজ অবধি পেরিয়ে যায়নি কিছুই। ঠিক এইখানে এসে চেনা যায়, যে ছাপ ফেলে এসেছি মনে করেছি, এ অবধি সেই ছাপ মেপে মেপে আগামী পায়ের দাগ রাখছি সামনেতে।

 

 

২।

আমার ঘর থেকে বাইরের দূরত্ব অনেকটা। কিন্তু ঘর এবং বাইরের দেওয়াল নেই বিশেষ। মানে, যাহা ঘর তাহাই বাহির। আলোয় গায়ের চামড়া কুঁচকে আসে, জ্বালা হয় বলে বাইরে বেরনো হয় না নেহাত আলোর সময়। বেরোতে গেলে ছাতা লাগে। আলো আমায় দেখে না, আমিও আলোকে দেখি না। স্কুল বা কলেজে এমন হয়নি। কলেজ ছিল কল্যাণীতে। সেখানে রোদ্দুর নেহাত কম নয়। দিক জ্বালিয়ে সূর্য উঠে জাওয়ার দুপুরে হেঁটে আসার সময়, আস্তে আস্তে কল্যাণী শিল্পাঞ্চলের দিকে যেতে থাকা ট্রেনের দিকে হ্যাঁচোড়প্যাঁচোড় করে দৌড়োতে যাবার সময়, “কাকু একটু দাঁড় করিও, আসছি” বলে যাওয়ার সময় এত আলোর কথা মনে থাকতো না। একবার এক বন্ধুকে এই কারণে সাইকেল থেকে ফেলে দিয়েছিলাম। মানে, সে বেচারা বোঝেনি যে সামনে পড়ে যাওয়া কিছুকে কাটাতে হঠাৎ বাঁক নিলে সে যে পড়ে যেতে পারে তা আমার মাথায় থাকবে না। বেশ কিছুদূর যাবার পর যখন রাস্তার লোকজন চীৎকার করেছিল, টের হয়েছিল। সেদিন কিন্তু ট্রেন চলে যায়নি। দাঁড়িয়েছিল। চলে যেতেই পারত।

 

কলেজ থেকে আসবার সময় গাছগুলোর মাথায় দুপুরের রোদ ঠিকরে গেলে ঠিক উপরের সবুজ পাতার রঙটা, কচি রঙ, চোখে পড়লে আর রোদ্দুর লাগত না। এই সবুজ বেশ সবুঝ ছিল যেন, ঠিক বুঝতে পারত। কী বুঝত বলা মুশকিল। কলেজ থেকে ফেরার রাস্তায় দেখেছিলাম অনেক বেশ ঘর, ঝুপড়ি খাটিয়েছে ট্রেনের লাইনের ধারে সবুজ গাছগুলোর ফাঁকে। ওরা উঠে গেলে দেখেছি ঝোপ যেমন ছিল, তেমন আছে। ঝোপেরও তো বাচ্চা হয়। হতেই পারে, কখনও একই সঙ্গে। মানুষ আর ঝোপ একা একা পাশাপাশি দেখে ওরকম ঘর আশা করেছি। আমার চামড়া, জামা, আরও বহুকিছু আটকে দিয়েছে সে-কালে। একালে জেনেছি এসবকে রেসিজম বলে। ইজম কাকে বলে যদিও এখনও চেনা হয়নি। না চেনা হলেও খুব কষ্ট নেই যদিও। ট্রেনে ওঠার সময় চুল ঠিক করার দায় ছিল না যেমন। ছিল শুধু হাওয়ার দিক করে দাঁড়িয়ে যাওয়া। হাওয়া সাজিয়ে দিত চুল। শ্যামনগর থেকে কল্যাণীর মধ্যে এত সবুজ ছিল, চামড়া পুড়তো না। কষ্ট হত না। অনেক সময় সন্ধ্যেবেলা ফিরেছি। একবার দুই বন্ধু, দুজন ছেলে গোটা কল্যাণী হেঁটে হেঁটে ঘোরার পর রাত সাড়ে নটায় স্টেশনে বসে থাকার সময় একটা প্রায় দেড় ফুটের বাচ্চা এগিয়ে এলো। পয়সা চাইল, যেমন চাইতে পারে। না দেওয়ার গল্পটাও স্বাভাবিক। তারপরেই একটা আধো-আধো বাচ্চা সেইরকম আধো স্বরে বলে ফেলল, “তোমাদের দুজনের মধ্যে বিয়ে হবে না দেখো”। হাসির আগে এই সরলতা চাইলাম। চাইতে চাইতে ট্রেন এসে গিয়েছিল।

 

আলোর কথা ছিল না তখন? সেখানে ফিরি। চন্দননগরে যে আলোর খেলা দেখতে লোকে ছুটে যায়, তাকে পেরিয়ে এসেছি বারবার। মেকি লাগে, বা চাইতে ভয় হয়। সকালে গেছি ঘুরতে। কখনও কাজ ফেলে, কখনও কাজের সাথে যুদ্ধ করে। নেহাত অকেজো মানুষ এর চেয়ে বেশী পারে না। যুদ্ধে সূর্য সাথী হয়েছে। রোদে ঘোরার সময় কষ্ট হয়নি। বরং এই যে মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে রোদ্দুরের থেকে, ভালো লেগেছে। সেই আমার, যে সারা বছর রোদের থেকে পালিয়ে বাঁচি। বাঁচার কথায় মনে হল, প্রতিবার মন ভেঙে যাবার সময় (প্রেম নয়) উঠে দাঁড়িয়ে মনে হয়েছে চারদিকে চেয়ে একবার ধন্যবাদ দেওয়া ভালো। ভালো এই জন্য যে আমি একা, অকিঞ্চিৎকর আমিও এই বিশালের সজীব অংশ। তবু গাছের ওই মগডালের পাতার মতো সবুঝ নই। হতে পারিনি। দেখেছি ঠাকুরের ছবি যেন স্পষ্ট ওঠে। জগদ্ধাত্রী দেখতে দেখতে অনেক বড় পরিবারের এক বড় গিন্নিমার কথা মনে হয়েছে। সব্বার কথা শুনবার জন্য বসে। কারো কথাই ফেলবেন না। এই আলোর কাছে আমি অন্ধকার ছাড়া কী নিয়ে যাবো?

 

এ কথা দুর্গাপুজোর ঠাকুর দেখতে গিয়ে মনেও আসেনি। আলো বড়। কলকাতার পুজো নয়, ঘরের পাশে। কলকাতায় আলো থাকে ঠিক, অন্ধকারও। এই একটা শহর মা-কে চেনে ঘরের ভিতর থেকে বাহির অব্দি। বা বাহির থেকে অন্তর পর্যন্ত। চিনতে চিনতে দেখে বিশালী তার চেয়েও বড়। একা হয়ে মা-য়ে মিশে যাওয়ার ছবি দেখা যায়। দেখেছি। কিন্তু মেয়ের মধ্যে এই মা-কে খুঁজতে চাইলে কোথায় যায়? কোথাও না। ওইখানে আলোর খেলা। খেলার মধ্যে কত ভাঁজ দেখতে দেখতে ফিরে আবার পেয়েছি একটা অনেক বড় শূন্য। এত বড়, এত আলো, এত আধারের এক অংশ আমি। চোখে আলোর কমতি কোথাও নেই।

 

বাইরে বেরোই না। রাতের অপেক্ষা করি, না হলে কিছুর অপেক্ষায় থাকি না। কিছু অপেক্ষা অপেক্ষাই থাকে, কিছু এমনি পেরিয়ে যায়। বাকি কিছু পড়ে থাকে প্রতি বছর একটা সময় জুড়ে সূর্যের আলোর নীচে হেঁটে যাবার সময়। অনন্ত প্রশ্রয়। আমার মাথা যন্ত্রণা করে না আর।

 

 

৩।

ভালো লাগা আর না লাগার দেওয়ালের ওপারে আবার মাকড়সা। মাকড়সা ভয় লাগে না, বিরক্তিও না। না-এর একটা আলাদা মোহ আছে, মায়া। মাকড়সাটা বেঁচে যায়। পিঁপড়ে হলে বাঁচতো না। অন্য কিছু হলে? কে জানে। জানার সীমা নেই, অথচ অসীম হয়ে উঠতেও অনেক কিছু খালি করতে হয়।

 

যাক, কী বলা হচ্ছিল? ও, দেওয়াল। দেওয়াল বললে মনে হয় না যে অবারিত দ্বার থাকলে বেশ ভালো হত? না থাকলেও যে ভালো, সেটা বয়স বাড়ার আগে মনে হয়নি। আরও বাড়লে বাইরে আওয়াজ হলে ভয় লেগেছে, দেওয়ালটা ভেঙে না যায়। ভাঙলে যে কী হবে সে কথা জানা, অথচ জানা নেই। কিন্তু একদিন ছাদ ঢালাই হবার সময় যখন গোটা বাড়ি খালি ছিল, খোলা ছিল, মনে হয়নি সব শূন্য। তখন বাবা ছিল। বড়রা থেকে গেলে ভয় সরে যায়। মায়া আসে। মায়া রয়ে গেলে মারা বিষয়টা দায় নয়, বিলাসিতা। শখে মেরে ফেলা যায়। ভয়ে সরে যাবার জায়গা সরে গেলে সব প্রাণী মেরে ফেলে, শুধু পরের মুহূর্ত যে বেঁচে থাকতে পারবে, সেই আশায়। এটা জাগতিক অভ্যেস।

 

কিছু অভ্যেস সহজ নয়। মেরে দেওয়া, মার খেয়ে যাওয়া, সহজ নয়। দর্শনের চেয়েও ধর্ষণ অনেক বড় আসল বিষয়। আন্তরিক এবং শারীরিক। মানসিক বটেই, কিন্তু সেও শরীর বাদে নয়। আঁচড় মনে পড়ে, গায়েও পড়ে, এবং তারপর একটা মানুষ, বা যে কোন প্রাণী খোঁড়াতে খোঁড়াতে এক পাশে সরে গেলে সবাই দেখে এড়িয়ে যেতে অভ্যস্ত হয়। পেট ভরা না থাকলে এর পর আর দর্শন আসে না। দেখা যায় না।

 

এই দেখতে না পাওয়া একটা পাঁচিলের অভ্যেস। যে মানুষগুলো, বা যে প্রাণীটা – এখানে প্রতিটা প্রাণীর নাম করা দরকারী, কারণ সবচেয়ে তাজা প্রাণটাও সরে যাবার আগে কিছু চেয়ে না পেতে পারে। এই চাওয়াটুকু বিশ্বাস, আর না পাওয়াটুকু বাস্তবের ৫০/৫০ কম্বিনেশনের বেঁচে থাকা। অর্থাৎ, তোমায় একটা বর্ম নিতেই হবে, শূন্যের পরের একটা স্ট্যান্ড হয়তো, বা আগের। এইটা তোমায় শেষ অব্দি ভাবাবে। শেষটা কোথায় হবে সেটা স্পষ্ট নয়। কেউ জানে না, জানলেও মানা সহজ নয়। আমি কেন খারাপ কিছু আমার জন্যে চেয়ে বেড়াবো? আমি কম কিসে? আমার “নেই” কিসের? এখানে এই পারস্পরিক বিরোধীতা পড়তে গেলে চোখে পড়ছে তো? এইটাই আসলে ওই দর্শনের বাইরের অংশ। দর্শন যা বলে না, বা প্রচ্ছন্নে বলে তা হল, ওই দেখা না যাওয়াটাও একটা দেখা। সেইখানে আলো-আঁধারির ধাঁধা লেগে গেলে তুমি ছোবল খাবে। না-ও খেতে পারো। কেউ তোমায় বলতেই পারে, তোমার “কম” কোথাও নেই। তোমারও হাত ধরা যেতে পারে। তার আগে বা পরের বিশ্বাস, মেনে নেওয়া, ধরে নেওয়ার হিসেব তোমার একার। এখানে যদি না চিনে পা বাড়াও, ভুল হতেও পারে, নাও পারে।

 

দেওয়াল টপকাবে কিনা সেটা যে কারো একার সিদ্ধান্ত হতেই পারে। সেসব সরিয়ে টপকে ফেলবার মুহূর্তে আসলে উপভোগ করা যায় ভরহীন একটা অবস্থা। উপভোগ করার একটা ভালো বিষয় হল, ঠিক আগের অবস্থা থেকে সরিয়ে এনে একটা নতুন সুরে তার বেঁধে দেয়। এর সঙ্গে পুরোনোর ধুন জুড়বে কিনা সে তোমার দায়। তাল কাটতেই পারে। সেটাই দেওয়ালের ওপার। সেখানে সব শেষ হলে ওই আগের মুহূর্ত অব্দি তোমার সবটুকু নিয়ে তুমি থেকে যাবে, পরের অংশের গল্প কেউ করবে না। অথবা, তুমি সকলকে নিয়ে পরের অংশে আসবে। আগের সঙ্গে পরের মিলিয়ে বিচার করার দায় তাদের। তুমি শুনতে চাইলে শুনতে পারো, কিন্তু আঁকড়ে ধরতে দিলেই চামড়া উঠে যেতে পারে। তার পরের কথা তুমি জানতে পারবে না। দর্শন তোমায় ওই অলিখিত সাবধান শেখায়। তুমি শিখলে কিনা সেটা সে দেখে না।

 

বাবা মারা যাবার পর বহু দুঃখিত মুখের মধ্যে আসলে দুঃখ দেখা যায়নি। পরিবার বাদে, পরিবারের পরের অংশ বাদে, অনাত্মীয়ের সম্পর্কে শব্দে ভরসা করা আমাদের রীতি। এসবের মধ্যে ভালো-খারাপ বা সন্দেহ-বিষাদ বিচার করা যায়, এবং সে সব সরিয়ে ভালোটুকু বেছে নেওয়া যায় কিছু খারাপের সাথে। যেমন মাছের কাঁটা। ইলিশে কাঁটা বেশী থাকবে জেনেও জিভে জল আসে। সেই সাবধান শিখিয়ে দেয় জীবন এবং ভয়ের সম্পর্ক। খুব জটিল নয়। এক সময় ভয় অভ্যাস হয়ে আসে। তখন দেখা যায় গোটা অংশ জুড়ে নিজের ছায়া থমকে আছে। দেওয়ালের ওপারে যাবার আগে আর একটা দেওয়াল যার ছায়া আসলে দেওয়াল পেরিয়ে চলে যায়।

 

 

৪।


বোধ ও বোধের দুর্বিষহ ওপারে শোভনসুন্দর, নদীটির দুপারের মতো। যে পার থেকে তাকে ভালো লাগে, সেই ভালো লাগা খানিই আসল। এর পরবর্তীতে, বা সময় পেরিয়ে গেলে কোন সত্তা নিজের মধ্যে অব্দি জীবন্ত থাকে না। আমরা আবরণকেই আভরণ বানিয়ে বাঁচি। না হলে শিল্প, যে অংশটুকু জীবন বলে ভাবছি, তার “সকল নিয়ে বসে” থাকা ক্ষুণ্ণ হয়।

 

এই জীবনের সবটা অংশ যেমন সহজ, তার সত্তাধীন স্বাতন্ত্র্য তেমন কঠিন। যে অংশটা স্বপ্নের মতো, তাকে বাস্তবে এনে দেখতে হলে স্বপ্নের ছিন্নপত্র পড়বার দরকার সেখানেই শেষ হয়ে যাবে। এর পর বাকি থাকবে বেঁচে থাকা। এই শব্দবন্ধ, “বেঁচে” এবং “থাকা”-র সমন্বয় কিন্তু বেশ কঠিন। এর অংশ ওই ফেলে আসা স্বপ্ন, তাকে বাস্তবে আনো, ছিঁড়ে ফেলো, আবার গড়ে তোলো, এবং আবার দুমড়েমুচড়ে নিজের মতো বানাও – কোনটাই সহজ নয়। সবচেয়ে কঠিন ওই “নিজের মতো বানাও” বিষয়টা। কোন স্বপ্ন কেন আমার ইচ্ছে মত হবে? নাও তো হতে পারে। না হও্য়াই স্বাভাবিক নয় কি? যে অংশ আমি তৈরি করছি, তার একটা বৈপরীত্য বেঁচে আছে বলেই সেই “তৈরি” বিষয়টা হয়ে চলেছে। এই বিপরীতে সপ্রতিভ শুধু আমার এই বিশেষ সময়ের বোধ, তার প্রকাশ। সেই প্রকাশ ঘিরে থাকা আমিটির স্বাতন্ত্র্য সেই সৃজনকালীন সময়ে বর্তমান। তার পরে? তার পরের আমিটির সাথে বাকি হাজার হাজার সত্তার ভেদ নেই কোন।

এই হাজার সত্তার মধ্যে তবু একটা সাময়িক বিলীনতা আছে। নিজের মধ্যে, অপরের মধ্যে, বা নৈর্ব্যক্তিক। ছোটবেলায় একবার বাবা চুল কাটতে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিয়েছিল দোকানে। সেখানে এক বয়স্ক মানুষ দীর্ঘক্ষণ ধরে কথা বলছিলেন। এক মাথা সাদা চুল। সেই ছোট জীবনে তখনও অত সাদা চুল শুধু রবীন্দ্রনাথের ছবি বাদে দেখা হয়ে ওঠেনি। বয়স্ক মানুষটি সেই সময়টি ধরে রেখে একটা দিনের তখনকার সময় থামিয়ে রেখেছিলেন যেন। আয়নায় ছায়া পড়ছিল, আর চোখ খুলে অত সাদা চুল দেখতে পাবো, যেন কী অসামান্য প্রথম দেখা, এই ভাবে চুল কাটা হয়ে গিয়েছিল। যদিও এটা একটা জৈবনিক ঘটনা, এখানে বিলীনতা আছে। বিলীন হয়ে গেলে মানুষ কি পায়? আত্মিক যোগ হয়তো, নিজের সাথে। এই এত বছর পরে সেই সময়ের কথা ভুলে গেলেও সেই মানুষটি, তার সাদা চুল, এবং সঙ্গে ছোট আমি-র সীমাবদ্ধতারও একটা মজা আছে, সেই অনুভব, এই সব মিশে সময় কোথায় দাঁড়ায়? এখানে হয়তো প্রাচীন বা আধুনিক, কোন বিচারই যোগ্য নয়। যে অংশ সময়ের একান্ত, সেখানে তুলনা না টেনে আনা অবধি বিচারের যোগ্যতা ধার্য হয় না।

 

এমন বিলীনতারও সত্তা আছে ঠিক। স্কুল ছুটি হয়ে গেলে, আগে বাড়ি চলে এলে, বা অন্য সময়েও, আর এক ক্ষুদে বাড়ি ফিরত আমরা খেলতে যাবার সময়ে। সময় কি করে এক হয়ে যেত বলা কঠিন, তবে পাড়ার এক মোড় থেকে অন্য মোড় অব্দি “কাল আমাদের ছুটি, গরম-গরম রুটি” – সাইকেলে করে চলে যেতে যেতে জোরে জোরে তার মুখে শুনে যাওয়া ঠিক এই কথাখানা খেলে আসবার পরে নিশ্চিত খিদে পাওয়াতো। কখনও আগেও হয়ে যেত খিদের পর্ব, যেন ওই কথাখানা রাস্তায় শোনা গেলেই খিদে পেতে হবে, এবং গরম রুটিই খেতে হবে। খিদের প্রশ্নে হলেও, ভেদহীন সত্তার এখানে বিলীনতা নেই বললে সত্যের অপলাপ। ভারী কথার থেকে সরে এসে শুধু এইটুকু কথা-র দিকে তাকালেও স্পষ্ট হয়, সত্তার বাইরে এই এক অর্থে একমেবাদ্বিতীয়ম আমরা। লিঙ্গ, বয়স, সময়ের ঊর্ধ্বে উঠে এক শুধু সাময়িক পূর্ণতা, যে পূর্ণ পেরিয়ে গেলেও অন্ততঃ চিন্তামণি স্বচ্ছ শ্বাস বলে দেবে, ভালো আছি।

 

 

৫।

ফিরে দেখার অভ্যেস মানুষের জন্মগত। ফিরে আসার নিশ্চয়তা নেই জেনেই ফিরে দেখা, কারণ অতিনিশ্চয়তায় মানুষ অভ্যস্ত থাকে। সেখানা তার ঘর-দুয়োর। সেখানা আছে বলে সে মনেই করে না। আবার না থাকার অনিশ্চয়তা তাকে জ্বালিয়ে মারে। এই জন্যই এগিয়ে এসে পিছনে তাকিয়ে দেখার অভ্যেস। অনেকেই সামনে চলে যায়, যেতে হয় বলে যে যায় তা-ই নয়। এই নির্লিপ্ততা তাদের দর্শন ভাঙে না। যতদূর এগিয়ে যায়, ততক্ষণের মধ্যেও সে জানে ঠিক পিছনে, ফেলে আসা জায়গায় কী ঘটে গেছে, কী ঘটে যেতে পারে। এই ঘটমানতা থামিয়ে ফেলার কোন চাবিকাঠি তাদের জানা নেই, কিন্তু তার পরে শূন্যতায় সে পূর্ণ হয়ে উঠবে কী করে সে কথা জানতে তার এগিয়ে যাওয়াটুকু দরকারী। সে জায়গা, সে সময়ের কাছে সে ফিরে না এলেও, সময় বা সে রকমের স্থানিক অবস্থানের সাথে তার দেখা হওয়া বাধ্য। দুনিয়ায় আসলেই কোন কিছু এক তরফা হয় না। যা হয়, তার জন্য আমাদের জীবৎকাল নেহাত ছোট। তাই এই জীবৎকালের সময়ে দেখার হিসেব সবটা পূর্ণ হয় না। ফিরে আসা জরুরী হয়ে পড়ে।

জীবন বলতে বড়ো একতরফা ভেবে নেওয়া অভ্যেস। এই একতরফা জীবনের বাইরে, অর্থাৎ ঠিক যে অংশে এক-আংশিক-জীবনের দাঁড়ি পড়ছে, তার বাইরে বেশ কিছু প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির তাৎক্ষণিক হিসেব থাকে। সহজে বললে, যা ধরা পড়ে, তার পরেও বাকি কিছু থেকে যায় যা পড়ে নিতে হয়। কোনারকে বালি পাথরের মূর্তিতে মূর্ত নর্তকীর নাচের বিভঙ্গের সময়ে মুখের প্রকাশের মতো। প্রেম, অবজ্ঞা, নিবিড়তা, কাম, স্নেহ, বাৎসল্য, প্রায় কিছুই এড়িয়ে যায় না। এই ভাব স্থির। আবার চলমান হয়ে যায় দৌড়োনো ঘোড়ার রশি টেনে ধরা পৃষ্ঠচ্যুত সওয়ারীর চেষ্টায়। আমরা দেখছি একটা স্থির মূর্তি। পাথর, অথচ সেই গতি দেখতে পাচ্ছি। এই গতি সময়ের মধ্যে থাকছে না, সময়কে ছাড়িয়ে যাচ্ছে না। যে মুহূর্তে সেই একই জায়গায় হাতির পায়ের নীচে আসা মানুষ – শিশু বা আর যেই হোক, দেখতে পাচ্ছি, ভাবছি এরপর? হাতির চেয়ে দূরে দাঁড়িয়ে দেখলে, ভীড়ের মাথার উপর হাতির আঙ্গিকের নিবিষ্টতা চোখ টানে। যেন সত্যি। কিন্তু সামনে এগিয়ে যেতে গেলে সময়ের প্রশ্নে সত্যির মুখে প্রশ্ন ওঠে, এর পর? সেখানে স্পষ্ট পায়ের নীচে দলে যাচ্ছে মানুষ, শুঁড়ে জড়ানো মানুষ। ব্যাখ্যা যেমনই হোক, আমরা চিনি এর পরের ঘটনাবলী। শিকল জড়ানো হাতির শরীরে। তবে সময় সমস্ত বিশালতা নিয়ে থেমে আছে কি? যদি তা-ই থেকে থাকে তবে এত নিশ্চিত কেন? এর পরে দলে যাওয়া এই সব প্রাণ নিয়ে কী কী হতে পারে ভেবে নিতে নিতে পিছনে ফিরলেই দেখা যাবে উঁচু সিঁড়ি, মনে পড়বে দেবতার অবস্থান, সেখানে ঢোকার আগে পেরিয়ে যেতে হবে নর্তকীদের, যাদের চোখে বিষাদ থেকে প্রেম, ঈর্ষা থেকে বাৎসল্য, স্নেহ – সব ছিল, আছে। এই স্থির সময়, এই সামান্য অংশ কিন্তু সেই পরীক্ষা নিয়ে নেয় যাকে পেরিয়ে আসার কথা ছিল, এবং বলবার ছিল যে এই জীবৎকালে সম্পূর্ণ হবে না কি? এই সামান্য জায়গাটুকুতে এপাশ থেকে অন্যপাশে মুখ ঘুরিয়ে দেখলেই বহমান এবং স্থির সময় এক আধারে রয়ে গেছে। আমরা পেরিয়ে আসিনি। পেরিয়ে আসতে পারছি না। এহেন পারা আমাদের কখনও সম্ভব নয়। একটা জীবৎকাল, যা আমাদের সরলরৈখিক জীবনের চেয়ে বড়, কখনও এক আংশিক অবস্থায় আমাদের পেরিয়ে আসতে দেয় না। এটা বদ্ধতা নয় তবু, চলমানতার নিয়ম। যে বৃত্তের উপর অবস্থান তার সময় সেই বৃত্ত পথে আবর্তন সম্পূর্ণ করবে, এটাই বিধেয়।

এই বিধেয়-বিধান মানি বা না মানি, ফিরে দেখতেই হয়, কারণ অজ্ঞাতে হলেও, নির্দিষ্ট চলমানতার ধারা, মূলতঃ যেখানে আগের ঘটনাকে অস্বীকার করা যায় না (তবে সময়ই অস্বীকৃত হবে), সময়ের কাছে দায়বদ্ধতা থেকে যায়। দায় শিক্ষার। পরীক্ষার মতো, আগে কতদূর শিখলাম, সেই অর্থে হাত বাড়াবার জন্য পরের পথে। অনেক অংশে এই শেখার জায়গা এত বিশেষ, এত বিশাল হয়ে পড়ে যে রন্ধ্রে রন্ধ্রে অভ্যাসের বীজ ঢুকে যায়। এখানা মন্ময় প্রবন্ধের বক্তব্য নয়, বিজ্ঞান। যে বিষয়কে রিফ্লেক্স বলা যেতে পারে। যে অংশের মানুষ ক্রমাগত কঠিনকে দেখে এসে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, তার মধ্যে সাময়িক এই সন্দেহের দায় কমে যায়। সময়কে সে ছোট ছোট পদক্ষেপে ভাগ করে সামলে নেয়। জিনগত-ভাবে এই পরিবর্তন আসে। যেমন, কেউ তেড়ে আসা বাঘ দেখলে থমকে মৃতবৎ দাঁড়িয়ে পড়বে, হয়তো সেটাই স্বাভাবিক; কিন্তু পদক্ষেপ বিভাগের ব্যাপার চলে আসে তখনই, যখন নির্লিপ্তি জানায় মানুষ এবং ওই প্রাণীটির মধ্যে তেমন ভিন্নতা কিছু নেই শুধু যদি “প্রাণী” হিসেবে মেনে নেওয়া যায় তাকে। এই অবস্থায় ওই মানুষটি বাঘের দিকে আচম্বিতে তেড়ে যেতে পারে। ভেবে নয়, শুধু “রিফ্লেক্স”-এর ভিত্তিতে। এই সারল্য পার্থিব। সাময়িক। জিনগত এই বদল, বিপদ আসা অবধি প্রায় অজ্ঞাতে প্রস্তুত থাকা, অথচ জীবন উপভোগের কোন অংশে বিন্দুমাত্র কমতি না রাখা, এই সব সেই সাময়িক পর্যায়ক্রম , সেই বৃত্তাকার চর্যার অংশ। ঠিক তেমনই অবসাদ। অভ্যাস হয়ে গেলে ঠিক ওই অংশের পরবর্তী পর্যায় থেকে জৈবনিক চর্যার প্রতি স্তর জানা হয়ে থাকে। সেখানে সত্তার শূন্যতায় গভীরতা অবধি চর্চিত বলেই নিতান্ত শূন্য অনালোক, নির্ভার। ফিরে দেখে হয়তো দেখা যায় এই দীর্ঘ পরিক্রমার পথ ঠিক সেখানেই থেমে আছে যেখানে সত্তার বোধের প্রকাশের সূত্রপাত। এর বাইরে আর হয়তো সময় চলেনি। প্রতিটি ঘড়ি দীর্ঘ যাপনের প্রক্রিয়ায় যখন চোখে আদপে একটি গোল যন্ত্র বলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়ে পড়ে, তার পর আর কী থাকে?

 

 

৬।

কবিতা বা কবিতা প্রাসঙ্গিক শব্দ যা কিছু প্রথম শেখা, সেসব এসেছিল “দেখি তো” – এমন একটা ভাবের থেকে। এই ভাবে অভাব কখনও ছিল না। অভাবের খাতায় কিছু জমেনি কারণ প্রতিদিন একটা একটা করে চেনা-জানার শব্দ জুড়ে জুড়ে বলে যাওয়ার বিষয় ছিল, এরপর কতটা জমল। জমাট বাঁধলে যেসব শব্দ আসতো তার মধ্যে প্রথম ছিল সরাসরি শব্দ বসিয়ে অল্পকথায় গল্পের খেলা। কবিতার মধ্যের এই খেলাটা খুব পছন্দের। কারণ, গল্পে একটা পথ থাকে। সে পথ ধরে মানুষজন চলতে চলতে বেশ অনেকটা দূর অব্দি এসে চিনতে পারে কোথায় ঘাসজমি আলাদা, কোথায় রাস্তা পাকা হয়ে গেল। এই এতোটা রাস্তা আসার চেয়ে কবিতা স্বাভাবিকভাবে চিনিয়ে দেয় একটা পথ, যেটা ঘাসজমির উপর দিয়ে যেতে যেতে পথ ছাড়া ভিজে পানার মধ্যে নেমে গেছে, সেখান থেকে আরও এগিয়ে শুকনো রাস্তা, কিংবা রাস্তার দুধারে গাছ – অথচ এই চাওয়ার মধ্যে চারপাশ বদলে যাচ্ছে না। চারপাশের হাওয়ার মধ্যে থেকে সেই আলাদা গন্ধটা শুধু সময়মতো খুঁজে নেওয়া আছে, এবং ওই গন্ধে বিন্দুমাত্র অসত্য নেই। বেশ বড় হলে যেটা বোঝা যায় কবিতা বা সাহিত্যের সত্য হিসেবে। অর্থাৎ সে আছে, সে সর্বত্র রয়েছে – অথচ তার এই বিরাজমানতা কোনভাবে অপর একটি বর্তমানকে বাধা দিচ্ছে না, বলছে না যে এখান থেকে ওই বাঁক নেওয়া যায় না। বাঁকের মুখে ঠিক কোন বাক বসে বাঁকের দুইপারের কথা একধারায় মিলিয়ে দিচ্ছে সে কেউ ঠিক করে শুনে না নিলেও কারো বুঝে নিতে অসুবিধে হচ্ছে না। এইখানে পাশাপাশি-শব্দ-বসে কবিতার চেষ্টা আসলে কবিতা হয়, টের না পেলেও তার ধুলোর একটা গন্ধ থাকে।

গল্প আসতে হলে বা বক্তব্যের বাঁধন আসতে হলে অনেকে বলেন, দুঃখ জরুরী। যাপনের এক অংশ দুঃখে কাটে, অন্যটি বড় হবার মাধ্যমে। এই মাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে পড়লে স্পষ্ট হয় যে, যদি না-ও দুঃখ আসে, তবু আনন্দযাপনের এক অংশে ওই যে ফাঁক থাকে, তার গোটাটার ছন্দ ধরবার দরকার হয়ে পড়ে। এই ছন্দ শূন্যের ছন্দ নয়, পূর্ণের ছন্দ কিনা তা বোঝবার সময়-বোধ প্রথমের থেকে থাকে না। তখন ওই সময়কে হয় ফিরে দেখবার, বা শুধু ছুঁয়ে থাকবার জন্য বলা। অথবা বলবার চেষ্টা, যেখানা সমস্ত সময়ের গায়ে একটা প্রলেপ লাগিয়ে দিয়ে রাখে। এই প্রলেপ সরল বা কঠিন, কোন স্তরীয়-ই নয়। একপ্রকারের ধারণা এখানা, যাতে বলবার কথা অনেক, ব্যক্ত অনেক হতে পারে, কিন্তু একেকটা শব্দে তার জটিল স্বচ্ছ হয়ে যায়। এইখানে যে কেউ বলতে পারে, কবিতা স্বচ্ছ হতে সময় নেয়, এবং সেই কারণে গল্প সহজ। গল্পের থাকে একমুখীতা, যেখানা কবিতার তেমনভাবে থাকে না। থাকতে নেই আসলে। যেমন, ঘরে বসে থাকা দুটো চোখ খোলা দুপুরের রাস্তায় দেখতে পাচ্ছে দূর থেকে কেউ একজন ঝাঁকা নিয়ে হেঁকে হেঁকে আসছে। এই হেঁকে আসার মধ্যে কিছু মুদ্রা থাকে, হয়তো সকলকে শুনিয়ে যাবার, বা হয়তো ক্লান্তি তাড়িয়ে ফেলবার, গল্প তার প্রতিটি শোনে। নিতে হলে গল্পকে এর প্রতিটি বিশ্লেষণ করে নিতে হবে। কবিতার কাজ অন্য। সে সেই মুদ্রাকে এনে আসন পেতে বসিয়ে দেয় খাতায়। ব্যস, তারপর বাকি কাজ করে নেবে আর কেউ, যে বলবে বা যে পড়বে। কেউ যদি না পড়ে, সেইসব কেউ না পড়ার সময়ে কবিতা সেই বাঁধা না পড়া, বাধা না দেওয়া অস্তিত্বের বিরাজমানতার স্ব-সঙ্গম। ওই এক বাঁকে মিশে গেলেও আলাদা করে চেনা যায়।

 

যে সময়ে হাত খুলে শব্দ আসে, এখানে হাত খুলে বিষয়টি প্রযোজ্য এই কারণে যে মাথায় তখন বহু ছবি এমনি ঘোরে। গল্পের ধারা হল সে ছবির মধ্যে সুতো বাঁধা, কবিতা সেখানে সব ঘুড়ি উড়িয়ে দিয়ে সুতোর কল্পনা করে নেয়। এবার একটা বিষয় দেখবার, আকাশজোড়া ঘুড়ির মধ্যে নীল, সবুজ, লাল, অনেক রঙের ছবি ধরে নিয়ে একে একে উড়িয়ে দেওয়া সহজ কোন ছাদ থেকে কোন সুতোর সূত্রপাত তা না জেনেই। এই না জানার মধ্যে একটা স্বাধীনতা আছে। এই স্বাধীনতা প্রথম কবিতাকে কবিতা করে দেয়। এবং তার পরবর্তী প্রতি স্তর-পরিবর্তনের ধারায় ফেলে যাওয়া সুর ও নতুন হাওয়ার একটা বাঁধন তৈরি করে। এ বাঁধনকে ভাষায় না লিখলেও বলা যায়, যেতে পারা উচিত অন্ততঃ। কারণ লেখা শেষে এ সবার হয়ে যাবে এমনটাই বিধেয়। সবার লেখা, যেখানা প্রতি সময়ে সবার কথা শোনে, এবং এমন জায়গায় বাসা করে যেখানে প্রথম শব্দের বাড়ি ছিল। সেই শব্দ এসেছিল স্বভাবের উচ্চারণের তাড়না থেকে। এই স্বভাব এক সময় সহজ হয়ে সময়ের সঙ্গে চলে। ভাষা তখন, অন্ততঃ সেই সময়ের জন্য, নিজের একটা ঠিকানা করে নেয়।

 

কবিতার “সিগনেচার” শব্দখানা বলা সহজ, করে ওঠা কঠিন। ওই যে ভাষাখানা একটা ঠিকানা করে নিল, সেও একে একে পাড়া ঘুরে ঘুরে সময়ে সময়ে খাপ বসায়, ধাপ খোঁজে। প্রতিদিন আর একতলার হাওয়া ভালো লাগবে কেন তার? এই ধাপের জায়গায় সবচেয়ে উঁচু সিড়িতে চড়ে তার মনে হয়, এর চেয়েও আরও দূরের যে সিঁড়ি, সেখানা সামনে এলে কেমন হবে। যে সময় সেই উঁচু স্তরের কাছে সে আসে, কবিতার বোধ তাকে বলে, এই তো, দাও পা, ওঠো। সে পা রাখে, উঠতে থাকে। বিড়ালের গাছ আঁচড়ে নখে ধার আনবার মতো। ধার নেওয়া নয়, বরং ফালা করে দেওয়া। নখে ধার দিতে গেলে এই ফালা ফালা করে দেবার রাস্তায় সবার আগে যাকে সে প্রতিপক্ষ পায়, সে হল তার নিজেকে। এইখানে একটা অন্য ধারার শুরু। নিজেকে ব্যাখ্যা করার মধ্যে একটা অপব্যাখ্যার দায় আছে। তাকে এড়িয়ে যাবে না মেনে নেবে, এই বিষয়ে যুদ্ধের গোটা দায় নেয় কবিতা। নিতেই হয়, কারণ “রাস্তা কারো একার নয়”। এই সব স্তরে যখন আবার সেই হাঁক পেড়ে যাওয়া মুটেওলার সঙ্গে দেখা হচ্ছে, ভাষা বদলাচ্ছে, ভাষার চরিত্রে কোথাও না বদলেও রঙ লাগছে। অর্থাৎ অভ্যাসের সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন, একটু আগে বলা সেই নতুনের হাওয়া। এইবার সেই মুটেওলা রাস্তার বাঁক ধরে চলে যাবে। এইখানে, এইবারে কিন্তু আর মনে হবে না যে এর পর ঘাসজমি শুরু বা ঘাসের গালিচা পাতা। কথা জানে সেইখানে রাস্তা বেঁকে গেছে। অথচ সেই যেখান থেকে প্রথম ভাষা এসেছিল, তার কাছে কিন্তু সেই আদিম সরলতা বাঁধা পড়ে আছে। তবে? এই তবে-র ঘরে যা দাঁড়ালো, তাকে দুঃখযাপন বললে কম বলা হয়, আবার না বললে একটু ভুল হয়। ঘাসের গায়ে কঠিন নেই কিন্তু ঘাস মরে তার বুকের উপর ওঠা পিচে তার শাপ নেই, একথা ছেঁড়া চামড়ার কাছে ঠাঁই পায় না। ছুলে গেলে পায়ের সাথে পিচেরও দোষ পড়ে। এই দোষের সূত্রে সিগনেচার বদলে যাবে। বদলে যাবে বলেই দুঃখযাপনের বক্তব্য আগের যে কোন ভাষা, কথার থেকে সরে এসে হয় আড়াল নেবে, না হয় নখ বসাবে। এইখানে অনেক সময় ব্যথার আরামের মতো কাজ করে কোন কোন কথা, যেমন “সেদিনও এমন ফসলবিলাসী হাওয়া/মেতেছিল তার চিকুরের পাকা ধানে”। সময় লাগে হয়তো তার বোধ তৈরি হতে, তবে বোধের পূর্বে একটা অভ্যাস এসে যায়। অভ্যাসের পর আত্মস্থতা। তারপর সেদিন, ফসলবিলাসী হাওয়া, এবং চিকুরের পাকা ধান তার সময় বদলায়। কথায় কথায় কোথায় এই বায়বীয় যাপন তৈরি হয় সে বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠার অনেক আগে ওই স্পষ্টতা একেবারে প্রথমকালের কবিতার ধুলোর গন্ধে মিশে থাকে।

 

এখানে শেষ নয়। বরং, এখান থেকে শুরু। শুরুর মধ্যে কোথাও ভারমুক্তির কথা থাকে, কোথাও শুধু ভারের কথা। বহনের দায় নেই। সে ভার সবার। এই বহনের ভারহীনতা বা সবার সঙ্গে সেই ভারের দায় নিয়ে নেওয়া, নিজের সুবিধের মতো ওজনদরে, এখানে কবিতা বাঁচিয়ে দিয়ে গেল। কারোকে বলার কথা নেই, ‘দেখো গো এই পথে গেছি’, কোথাও থেমে গেলে কিছুটা থমকানোর দাগ রেখে পরের দাগের চলা শুরু করা যায় যেমন, তেমন করেই বড় রাস্তায় চলার সময় ঘাসের কলি দেখার কথা না ভুলে চলা যায়। এই কাব্যময়তা গদ্যে আছে, থাকে, কিন্তু কবিতা ওই ঘাসের সঙ্গে টান রাস্তার বাঁকের সঙ্গে যে ফেলে আসে না, তাতেই শ্রাবণ পায় শব্দ। সেখানে ক্যাকোফোনির বিচিত্রতা বাতিল নয়। সব সুর একটা অর্কেস্ট্রার মতো সাবলীল। এই সাবলীলতা বাসা বানানোর প্রথম ধাপের মতো। প্রথম যে ঘরে ঢুকল সে দেখতে এসেছিল নেহাত। থেকে যাবার কথা অনেক পরের। উড়তে পারবে কিনা সে হিসেব ঠিক রেখে তবেই সেখানে বাসার খোঁজ চলে। “একটি পাতার তলে শুই যদি সাষ্টাঙ্গ আগুন/পেতে দিই ভরা সরোবর হ্রদের তলায়” – কোথায় থামতে হবে, এইখানে নিশ্চিত না থাকলেও চলে। যদি অনিশ্চয়তা থিতু হয়, তবে প্রথম স্টেজে উঠে কথা বলার মতো, ধীর, আস্তে প্রথম শুরু হয়ে বেশ কিছুদূর এসে দ্রুত শেষ হবে। তারপর শেষের লয় ধীর হবে। আস্তে আস্তে পরিধি ছোট হয়ে পরিধি বাড়বে। এই পরিধি সেই ঘরে বসে মানুষ চিনে, তার না-দেখা আসার বাঁকের থেকে না-দেখা যাওয়ার বাঁক পেরিয়ে দূরে যাবার কথা বলবে। এই দূরে চুপ স্থিত হবে। শব্দ এখানে নির্দিষ্ট, কিন্তু বিস্তৃত। এই বিস্তারে প্রতিটি ধুলো পরিচিত। আমি নেই, এমন ধুলোর ছাপ আর পড়ে থাকবে না কোথাও।

Tags: Aloprithibi, Prose, Tapobrata Mukhopadhya
পার্থজিৎ চন্দ
শ্রীজা ভট্টাচার্য

About author

About Author

aloprithibi

Other posts by aloprithibi

Related posts

Read more

পার্থজিৎ চন্দ 

August 16, 2022 0
হারানো হিয়ার কুঞ্জ ‘অচেতন মনো-মাঝে তখন রিমিঝিমি ধ্বনি বাজে’   ‘সময় মুছিয়া ফেলে সব এসে সময়ের হাত সৌন্দর্যেরে করে না... Continue reading
Read more

বিজয় সিংহ

August 16, 2022 0
সংকেত ঈশ্বর ফিরিয়েছেন প্রাচীন মনসুন কিছু ঘুম বাকি থেকে গেছে এই ভেবে স্বপ্নেরা নির্ঘুম হয় সুতরাং দুর্গের প্রাকারে পাহারায় যোগ... Continue reading
Read more

বব ডিলান | ভাষান্তর : রাজীব সিংহ

August 16, 2022 0
যুদ্ধের প্রভুরা (Master of War) এসো যুদ্ধের প্রভুরা যারা তৈরি করেছ বন্দুক গড়েছ মৃত্যু-উড়োজাহাজ বোমায় ভরেছ সিন্দুক। দেয়ালে দেয়ালে আড়ালে... Continue reading
Read more

শাম্ব

August 16, 2022 0
শ্রী আবহে বিষাদ লিখন ১ কাকভোরে রক্তকরবী তুলে এনেছে কিশোর আর সুধা এসেছিল। সুধা দিদি। চাঁপা ফুল রেখে ফিরে গেছে।... Continue reading
Read more

সমীরণ ঘোষ

July 15, 2022 0
বিজনের দাঁড়   এক ফাঁকে ফাঁকে আলো এসে হত্যার ফাঁকের বিঘত নখের কুকুরে ছেঁড়া ভ্রান্তিকর খুলির জ্যোৎস্নার বঁড়শি ছায়ার টোনা।... Continue reading

Leave a reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked

Categories

  • Aloprithibi Blog
  • Critic
  • Editorial
  • Interview
  • Japani Haiku
  • New Youngest Poet
  • Poems
  • Prose
  • Story
  • Translation
  • Uncategorized
  • World Poetry

Latest posts

পার্থজিৎ চন্দ 

August 16, 2022 0

বিজয় সিংহ

August 16, 2022 0

বব ডিলান | ভাষান্তর : রাজীব সিংহ

August 16, 2022 0

শাম্ব

August 16, 2022 0

সমীরণ ঘোষ

July 15, 2022 0

Popular Tag

Aloprithibi Aloprithibi Blog DUSTIN PICKERING English Poetry Francisco Munoz Soler Parthajit Chanda Poems Prose Spain World Poetry অনিমেষ মণ্ডল অনুবাদ অনুবাদ কবিতা অমৃতাভ দে অলোক বিশ্বাস উজ্জ্বল ঘোষ উমাপদ কর গুচ্ছকবিতা চন্দ্রদীপা সেনশর্মা চন্দ্রনাথ শেঠ তরুণ কবি ধারাবাহিক নতুন মুখ পঙ্কজ চক্রবর্তী পার্থজিৎ চন্দ পিন্টু পাল প্রবন্ধ প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী বাংলা কবিতা বিজয় সিংহ বিপাশা ভট্টাচার্য বিশ্বসাহিত্য মৌমিতা পাল রজতকান্তি সিংহচৌধুরী রুদ্র কিংশুক শাশ্বত রায় শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তী শুভদীপ সেনশর্মা সমীরণ ঘোষ সম্পাদকীয় সাক্ষাৎকার সায়ন রায় সুবীর সরকার সোহম চক্রবর্তী হারানো হিয়ার কুঞ্জ
  • English
    • Arabic
    • This is just for demo

© Aloprithibi 2022 Allrights Reserved | Powered by ZeroData 

হোম
কথকতা
লাইফpeg
ব্লগ
Sign in