দ্রোহকাল
বেদনার দিনে মনে হয় আমার মধ্যে এক তপস্যা-প্রবণতা আছে
হৃদয় নিঙরে আসে তার আপক্ক ফল
এইসব সময়ে দুপুরের রোদ যেন অন্য কোন দেশ থেকে আসা
ঝিমধরা একটি ঘুঘু মিশে থাকে অশ্বত্থ পাতায়
ধোঁয়ার নিশান দেখে আত্মহত্যা করে ফ্যালে রাতচরা পাখি
‘আইজ রাতে ফিরবানি ন’ ফিসফিসিয়ে বরকে বলে তরুণী বর্ষা
টাইমার সার্কিটে মিশে আছে তার গাঁওয়ালী শিশুদের হাসি
সংসার
উপত্যকায় শীতরোদ উঠলে
কেমন এক হাওয়া বয়…
সে যেন ছুঁইয়ে আসে ঠিক
জন্মের আগেকার মুহূর্ত
ওই হাওয়া চিনেছিল
পূর্ণগর্ভা আদ্যা জননীকে
তার নাভিপথ জুড়ে কেন্দ্রাতিগ ঠেলা
ঢুকে পড়ি অলাতচক্রে
সংসারসাধনা
কারফিউ
রাজপথে পড়ে আছে থ্যাঁতলানো কুকুরের ছানা
পিচের উপর তার আঠালো ঘিলুমন্ডে
বারবার পিছলে যাচ্ছে কুকুর জননী।
এ দৃশ্যে নির্বিকার তুমি ঘটনা ডিঙ্গোও
সুনিপুণ ঘরে ফেরো রুটি তড়কা কিনে।
অবরোধ এড়িয়ে রাস্তা পেরোয় একটি একচক্ষু শালিখ।
আর মৃত নগরীর আকাশ ছেয়ে অগণিত মাছি
ফুটিয়ে তুলছে তোমার মুখের আদল…
দারুব্রহ্মমায়া
হিজল গাছের বনে লেগে আছে দারুব্রহ্মমায়া
ঘিরি ঘিরি নাচি
আর বলি
এই যে জীবন বাঁচি
ট্রালালালা, ট্রালালালা
মৃত্যুর ছোঁয়াচ এড়িয়ে
ট্রালালা
যে জীবন বাঁচি
হে দারুব্রহ্ম …
আর উঠে যাই
লোহার প্যাঁচানো সিঁড়ি বেয়ে …
পায়রার ঘর ছুঁয়ে
কাল আমি ভাগ্য ফেরাব
আলসে টপকে ঢুকি
প্রপিতামহীর পেটে।
ইন্দ্রিয় সন্ত্রাস
ছায়ার অতলে বসি
আর দরজা খুলে যায়,
দরজা খুলে যায় প্রতি প্রবিষ্ট শ্বাসে।
তবুও ডাকিনা আমি
তোমাকে আবার
জারুল মায়ায় মিশে ভুলে গেছ তুমি
কীভাবে অপার সব জগৎ-বিস্ময়
অকপট হত যৌথ রহস্যমুদ্রায়।
এখন অরণ্য তুমি নিজে।আমি চাই বৃক্ষজন্ম,
টের পাও স্নায়ুস্পন্দন, আমার
তোমাকে ডাকিনি, তবুও ডাকিনি আর।
2 comments on “পৌষালী চক্রবর্তী”
উজ্জ্বল ঘোষ
ভালো লাগল
Raju mondal
অনবদ্য, দুর্দান্ত লেখা
আপনার আরো লেখা পড়ার ইচ্ছে রইলো