চিনতে না পারার খেলাধুলো
১
পাখিলাগা ঝুলবারান্দার দেশে
বর্ণমালা গান গায়
গন্ধলেবুর বিকেল –
কবেকার কথা মনে করে ভাবি
এই বুঝি
মধুমাখানো জামা কিনে দেবে
আকাশে বিকেল বেজে ছড়িয়ে যাচ্ছে
সুদূরের চৌকো
তুলোর নামতা মোড়া থৈ জল থামিয়ে দেয় পা
অনেকগুলো নোন্তা লাগা রুটি
জমিয়ে রাখা বাক্সে ফিরে আসা ওড়ায়
রাত হলে পর, রেললাইনের ঘুমের ভেতর
আস্তে আস্তে
মায়ের গল্পেরা নেমে এসে পাশে বসে
কপালে হাত দেয়
২
পাতার পাহাড় পেরিয়ে হাত খুলে দিয়েছি মওলা
বিকেলের দিলরুবায়
ভাঁজ খুলে খুলে
ছোট ছোট গল্পেরা খেলা করে।
ফাঁক পেলে আলতো করে তুলে নিতে হয়
সন্ধের এমনিটুকু এমন –
জলের আশনাই হয়ে দুলে যাওয়া পথ
চুমু খেলে কাঁদে
পা পেরোতে পেরোতে
নাম না জানা কয়েকজনের
ঘর লেখা ঝিরিঝিরি রাত
কেমন শ্বাস খুলে নরম
দেখতে না পাওয়া আছিলায়
হোঁচট খাওয়া কথাবার্তার ছায়াঘেরা নিয়ে
একটা খিদের পুরনো নখ ঘষে গেল
সম্ভবত অনেকগুলো অচেনা প্রচুরে
৩
সাদা ও নরম জলজতায় লেখা থাকে সমস্ত ফিরে আসার সফর…
যেরকম প্রত্যাখ্যানগুলো
ভাঙা সুটকেস, ছেঁড়া রুটি আর ফটোফ্রেমের রাত
ঘামলাগা রাত থেকে নেমে আসা পাথরেরা
লেপটে থাকে গোপন রাখা কান্নায়
আলোগুলো উষ্ণতা। আলোগুলো খিদে
থালার মতন
রাস্তার অদলে বদলে চুলকাঁটা বাঁকগুলোয় চিঠি বাজে
শহরের ডায়েরি
তারা কেবল চিনতে না পারার খেলাধুলো জানে
৪
লাল মাংসের দাঁত
কাচের রাস্তায় যেতে যেতে দেখছে
ভেজা গাডিবারান্দার কোণে
ঝুলে থাকা ক্যালেণ্ডার
একটা অনেকদিনের পাড়া
একটা অনেকরাতের বারান্দা
একটা তোবড়ানো থালা
ঘুমের মধ্যে চেটে নেয় নুন আর মধুর আরাম
নাবিকবিহীন জাহাজ থেমেছে একই পর্দায়
বহুদিনের যাওয়া পেরোতে পেরোতে
একা একাই তার খুব একলা লাগছে…
৫
আলোর দোয়াতে ভরে আছে আলোরাই
এখানে স্পর্শ ভাঙে
এলানোর পরশ হয় ছায়ার বিকেলে
একটা ছাতা লিখব বলে বসে আছি
বসে আছি হে কবে শুনিব তোমার
লেখা আর খেলা পাশাপাশি বসবে
চুমু খাবে
বসে আছি হে বন্ধ আয়নায়
আয় না…
আঙুলের টক টক স্টপেজে এই যে এসে থামলো শব্দের চুপ
পাখিদের ঝাপসায় এই যে বৃষ্টির দূর বাদাম গাছ
মাঝেমধ্যে মেপে নিচ্ছে রঙ বিজন
কী অভিমান মেয়েটার।
সবটুকু আসতে পারেনি
তবু ধরা পড়া সমস্ত গায়ে ঢালা দোলে
দোল দিচ্ছে থেমে যাওয়ার দোলনায়
বাড়ি ফিরতে চাওয়া একটা লাল ফ্রক
দেখতে চাইছে
এতগুলো শব্দের ভেতর
চিনতে না পারার খেলাধুলো নিয়ে
কে যে কোথায় শুয়ে আছে
4 comments on “কবিতা : কৌশিক চক্রবর্তী”
Nilabja
বিইইইইউটি… খুব ভাল লাগল… এত্তগুলো জায়গা তৈরী হল ভাললাগার। কীসব নির্মাণ!
রঞ্জন মৈত্র
মন ভাল করে দিলি কৌশিক
ru--shrabonjol
This comment has been removed by the author.
ru--shrabonjol
খুব ভালো লাগল কৌশিক।( অনিন্দিতাগুপ্তরায়)