অন্ধকারের ছায়ায় বসে একটি ছোটো মেয়ে
আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল:
ঈশ্বর, কখন আমি জানতে পারবো
আমার জীবনের সঠিক পথ?
ঈশ্বর হাসলেন এবং মেয়ের দিকে
তাকিয়ে বললেন:
কিছু এসে যায় না কোন পথ
তুমি বেছে নিলে জীবনে,
আমিতো সর্বদাই তোমার পাশে।
কবিতা আমার কোটকে
জীর্ণ কোট, শোন
যখন আমরা আরো এগিয়ে যাচ্ছি
এই কবিতা তোমার জন্য
তোমার লাইনিং-এ এটা আটকে দেব
আমরা হয়তো আরো কিছু দিন কাটাবো একসঙ্গে
সব রকম হাওয়া বাতাসে
আর উপভোগ করব এই ভ্রমণ …
পৃথিবী
পৃথিবী
রক্ষা করো সূচনাগুলিকে
জগৎ
সজাগ হও উচ্চারণের প্রতি
জগৎ
পৃথিবীর প্রতি সজাগ হও উচ্চারণের প্রতি
জগৎ
পৃথিবীর প্রতি হও কৃতজ্ঞ
পৃথিবী
নমস্কার করে জগৎকে
উঁচু নীল দিন
ভাবনার শীর্ষ এই, আর
কোনো শিল্পই একে ছুঁতে পারে না,
নীল, এত নীল,দূরবর্তী দ্বীপ
আর সমুদ্র, গর্জনরত
কোনো শিল্পই একে ছুঁতে পারে না, মনই কেবল
চেষ্টা করে সুরবদ্ধ হতে,
উন্মুক্ত ও শান্ত হতে
জগৎহীন নিজেকে সে জানে
হীরকের দেশে
অন্তিম নিরক্ষর আলোয়।
সাদা বন
তাই বইপত্র, ঠেলে রেখেছি দূরে
এবং দেখে নিচ্ছি তুষারমাখা গাছ
থেকে পড়া শেষ আপেলগুলো
…এবং হঠাৎ
হঠাৎই জানতে পারি আমি ছিলাম সর্বদা
এই সাদা বনের ভেতর
বইপত্রের আগে
এবং এই বইপত্রের পরেও থেকে যাবে
এই তুষার-আবৃত বন
এবং আমার হৃদপিণ্ড জুড়ে শূন্যতা থাকবে
এবং মস্তিষ্ক খোলা থাকবে বাতাসের দিকে
একটি বাঁকানো পাইনের ব্যাখ্যা
অ.
আমি হাঁটতে শুরু করলাম
বড়ো হয়ে
যেমন সবাই করে ।
আ.
তারপর আমি নিলাম
দক্ষিণে একটু বাঁক
পুবে ঝুঁকে
একটু দীর্ঘ উত্তরে
তারপর হঠাৎ মোচড় পশ্চিমে ।
ই.
এখন আমার কাছে অগ্রসরমানতা
অদ্ভূত কিছুর জন্য প্রস্তুতি
আমার দর্শনে পাইন ছাড়াও কিছু আছে ।
ঈ.
হ্যাঁ, আমি একটা পাইনের চেয়ে বেশি কিছু
আমি একটা মহাজাগতিক চিহ্ন ।
উ.
আমি বাগধারা সম্মত
আমি অদ্ভুত ব্যাক্তিস্বত
আমি সক্রেটিসেরও আগে।
ঊ.
আমি হতেও পারি চিনা
লি পো, তু ফু
এবং মাননীয় টুয়াং সু-র মতো।
ঋ.
আমি শান্তভাবে থাকি
তবুও আসে ঝড়
আমি নাচি দার্শনিক নাচ
অস্তিত্বের হৃদয়ে ।
এ.
আমার মস্তিষ্কের সাহসী শাখাগুলো
সূর্যালোক বৃষ্টিতে সজীব।
আমার বুনো মন
বাতাসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
ঐ.
অই, দেখো পাগল পাইন
স্পর্শ করেছে আকাশের নীলিমা।
কেনেথ হোয়াইট ও তাঁর কবিতা
স্কটিশ কবি, পণ্ডিত ও লেখক কেনেথ হোয়াইট (Keneath White, 1936) -এর জন্ম ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের ২৮ এপ্রিল স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোর গরবালস এলাকায়। তাঁর বাবা ছিলেন রেলওয়ের চাকরির সঙ্গে যুক্ত। এই সূত্রে কেনেথের শৈশব ও কৈশোর কাটে আইরসার উপকূলে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হোয়াইট ফরাসি ও জার্মান ভাষা-সাহিত্যে ডিগ্রি লাভ করেন। ইংরেজি ও ফরাসি দুই ভাষাতেই কেনেথ মৌলিক কবিতা লিখেছেন। তবে ফরাসি সাহিত্যেই তিনি অধিকতর খ্যাতি পেয়েছেন। তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ : \’দ্য কোল্ড উইন্ড অব ডন\’ (১৯৬৬) , \’দ্য মোস্ট ডিফিকাল্ট এরিয়া\'(১৯৬৮), \’দ্য বার্ড পাথ\’ (১৯৮৯), লে রিভে দু সাইলঁস।
কেনেথ হোয়াইটের কবিতায় মানুষ ও প্রকৃতির গভীর সম্পর্কের কথা আছে। প্রকৃতিবিমুখীন আধুনিকতাকে কেনেথ বর্জন করেছেন । প্রকৃতির সঙ্গে ওতপ্রোত যে মানব জীবন তাকেই কেনেথ ধারণ করেছেন তাঁর কবিতা ও চিন্তা-চেতনায়। তাঁর \’অন দি আটলান্টিক এজ\’ গ্রন্থে মানুষ ও প্রকৃতি এবং প্রকৃতি ও কবিতার নিবিড় সম্পর্কের কথা বলতে চেয়েছেন ও ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন কেনেথ।ভূ- কবিতাতত্ত্ব বা জিওপোয়েটিক্স ধারণার অগ্রদূত কেনেথ হোয়াইট । আধুনিকতায় প্রকৃতির স্থান পরিধিক। কিন্তু আজকের চিন্তা-চেতনায় প্রকৃতির অবস্থান আবার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ।
অনুবাদ ও পরিচায়ন : রুদ্র কিংশুক
One comment on “কবিতা : কেনেথ হোয়াইট • ভাষান্তর : রুদ্র কিংশুক”
সুকান্ত দে
এখানকার কবিতাগুলি ইংরাজি না ফরাসি ভাষা থেকে অনুদিত সেটি জানতে পারলাম না। ব্যক্তিস্বত — ইংরাজি শব্দটি জানতে পারলে সুবিধা হতো।