শর্তাবলী প্রযোজ্য
চিরকাল অবিশ্বাসী আচারে বিচারে
সিঁদুরের লাল থেকে এঁটো ছোঁয়াছুঁয়ি
অসহ্য অপ্রেমে স্পর্শে কিংবা আদরে
এ বাবা এভাবে মেয়েদের যেতে নেই
উচ্চগ্রামে হাসি ঠাট্টা! দুটো মেয়ে একা!
যে সয়, সে রয় মার্কা কথামালা দিয়ে
সাজাতে চেয়েছে যারা উচ্চাসনে বসে
বিশুদ্ধ ঘৃণার চোখে দেখেছি তাদের
ভালবাসা বোধকরি তত শুদ্ধ নয়
প্রতিশোধ
তোমার জানা উচিত।
হাতে কোনও ঠিকানা না নিয়েও শব্দেরা যে পৌঁছে যেতে পারে ঠিক ঠিকানায়, সেটা জানা উচিত।
তাই বার বার ঠিকানা বদল করেও লাভের লাভ কিস্যু হবেনা
শুধু শুধু বাক্স প্যাঁটরা বেঁধে বর্তমান প্রেমিকটিকে দিয়ে সেসব বইয়ে
গলির ভেতর গলি তার আবার ডান দিক বাঁ দিক।
তারপর দোতলা একতলা। তালা, চাবি।
জানালা দরজা খেয়াল রাখা সব সময়!
আওয়াজ হলে বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া।
মাঝরাতে তাকে ঘুম থেকে তোলা।
তার বোকা বোকা আশ্বাসে সাহস খোঁজার চেষ্টা।
তারপর আবার এক গ্লাস জল ঢোঁক না গিলে খেতে গিয়ে গায়ের ওপর ফেলা।
ঝক্কি কার? তোমার না আমার?
আমি পিছু নাই নিতে পারি।
নিইনি। কারণ তুমি না জানলেও আমি জানি শব্দের ঠিকানার প্রয়োজন নেই। চাইলেই পৌঁছে যাবে ঠিক ঠিকানায়।
ধীরে হাওয়া বইলেও শব্দ হয়। গাছের পাতা ঝরে পরলেও শব্দ হয়। মেঘেরা স্থান পরিবর্তন করলেও শব্দ হয়। সন্তর্পনে বৃষ্টি নামলেও শব্দ হয়।
আমি পিছুও নিইনি।
কিন্তু এমন কোনও শব্দহীন ঠিকানা খুঁজে পাবে কি তুমি যেখানে গাছ নেই, হাওয়া নেই, মেঘ নেই?
চিরকাল চমকে উঠবে বারবার। বধির হতে চাইবে।
অথচ আমি ডিহিং নদীর ধারে নির্জনে বসে সবুজ জলের শব্দ শুনব আর শুধু শুনতেই থাকব…
সংযোজন
তোমায় যত না ভাবি, তাকে ভাবি আরো বেশি।
উত্তর খুঁজি পাশাপাশি…
কী সেই আলাদা কিছু, নীরবে করেছ আয়োজন
সেসব প্রতিফলন কিছু কি পড়েনি মুখে?
আপাতঃ নির্দয় বুকে ভীষণ আলোড়ন!
চেয়েছ আড়াল দিতে, পেরেছ কী পারোনি
সেসব প্রশ্ন তোলা থাক –
তাকে শুধু ভেবে গেছি, অলিগলি খুঁজেছি
আমাদের ‘বিস্তর ফারাক’
সেও কি নির্জন? সেও একলা গাছের কাছে বসে?
নাকি কোলাহলময় যান্ত্রিক শব্দে মুড়ে
নিজেকে বোঝায় অনায়াসে!
তোমার অক্ষর চেনে? সে তোমার লেখা মনে রাখে?
কবিতা কি ভালবাসে? কবিতা জড়িয়ে শুয়ে থাকে?
আদৌ কবিতা পড়ে? (নাকি) অবহেলা করে কবিতাকে!
ভুল
তোমার কথার ভার ছিলনা।
হয়ত তোমার ধার ছিলনা শূন্য হাতে
যখন যখন চাইতে গেছি, তখন তোমার আর ছিলনা একটু সময়
গাছের মত আমিও আছি, বলতে গিয়েও থমকে গেছি
লক্ষ বছর দাঁড়িয়ে থেকেও তাই মনে হয়
সব আগাছাই ঠিক ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়ে
গাছের তলায় পুড়িয়ে তাদের শোধ করেছি ঋণের হিসেব
আবার ভাবি, ভুল করেছি, ভুল করেছি ফিরিয়ে দিয়ে
লামাহাটা
ততক্ষণে ভোর হয়ে গেছে, ততক্ষণেই রাস্তায়
খানিক ঠাহর করা যায়, ঘন কুয়াশায় চাদরে
বহুদূর গামী চোখ পড়ে যায় চুপ করে থাকা পাইনের
সারি সারি বেঁধে অদূরে দাঁড়ানো, নেই আমি কোত্থাও নেই
এগিয়ে যাচ্ছে আমার হৃদয়, মেঘ ঢুকে আসে সহজেই
ফোঁটা ফোঁটা গলে পড়ছে বাইরে, ফেলে ফেলে যাওয়া স্পর্শে
চরাচর জুড়ে শব্দহীনতা, দিগন্ত জোড়া স্পন্দন
হয় আমি সর্বত্রই আছি, নয় আমি কোত্থাও নেই!
5 comments on “কবিতা : প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী”
অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
\”লামাহাটা\” কবিতাটি অসম্ভব সম্ভাবনাময় মনে হল…
অনুত্তমা
বাহ
সম্রাট চৌধুরী
সবকটি কবিতা পড়েই খুব ভালো লাগল, তবে 'প্রতিশোধ' টা বোধহয় একটু বেশী সময়ের জন্য জায়গা করে নিয়েছে মনে…
Rudra Kinshuk
lamahata kabiter 4th line bhalo laglo.
Barun
খুব ভালো লাগল … শুরু থেকেই ইনি আমার প্রিয় কবি ও কাছের মানুষ