অঘোর কাব্য ৪
বন্ধ ঘড়ি ও পৃথিবী — এক অসীম সম্পর্ক
পৃথিবী ও আমি, দূরত্ব পেরিয়ে
পরস্পরের ভেতর ঢুকিয়ে দিচ্ছি হাত
ঘেঁটে দিচ্ছি অন্ত্র-তন্ত্র-পাচনপদ্ধতি…
সেই এঁটো হাত, গালে মুছে
একে অপরকে জড়িয়ে
বসে পড়ছি
ঘড়ির ওপর
অতঃপর
আমি ও পৃথিবী — এক অসীম নীরবতা
জুডাসের তৃতীয় চক্ষু
একটা ঘর খুলে যাচ্ছে আমার সামনে। একটা মঞ্চ। পর্দা উঠলেই জ্বলে ওঠে যজ্ঞের কুণ্ডলী। তাতে পাক খায় সূর্য; পাক খায় সপ্তর্ষি। কোথা থেকে থোকা থোকা ফুল এসে পড়ে। পায়ে লাগতেই, দৃশ্য পরিবর্তন। প্রসবের রাত। মাথার ঘামটুকু জড়িয়ে শুয়েছিল একটি নদী। দুটো পা দুটো মাথা নিয়ে মাঝি ছুঁয়ে দিয়েছিল আমায়। আমিও দেবব্রত হতে পারতাম; ততক্ষণে আমার পাঁজর থেকে দুটো ডানা বেরিয়ে গেছে। আমাকে উড়তে দেখে মা’র ঘুম ভেঙে গেল। ‘ওরে খোকা, দূরে যাস নে। এদিকে আয়। এদিকে…’
উড়তে উড়তে ছুঁয়ে ফেলা জুডাসের তৃতীয় চক্ষু। অমনি বিকট লাল একটি চেয়ার সামনে এসে পড়ল। চারিদিকে কারা নাচছে। কোনো বোল নেই। বাঁধন নেই; শুধু কে একটা আমায় টেনে টেনে সুতো করে দিচ্ছে। ওরা আরও নাচছে। নাচুক, বেশ লাগছে! সুতো নিয়ে ঘুড়ি বানাবে এবার। আমাকে আবার উড়তে হবে; তবে এবার পেছনে টান দিয়ে রাখবে একটি ছায়া।
‘মা!’
আরও দূরে সরে যাচ্ছি। ঘুরতে ঘুরতে, ঠিকানা বদলে যায়। কোনও ঘর খুঁজে পাই না। গলায় মালা পড়ে ঘুরে বেড়াই প্রতিটা কামরায়। রাস্তা খুঁজে পাই না। শুধু বহু দূরের এক কালচে উঠোনে বসে আছে মা। থালা হাতে তাকিয়ে রয়েছে
‘খোকা, এদিকে আয়’
নিজস্ব ছায়া ও একটি ঘটে যাওয়া মৃত্যু
১
বাতাসে ভাসছে দেহ
সন্তানের নির্জন নাভি, খুঁড়ে পেতে চাইছে
তাঁর মাতৃস্বাদ
২
গর্ভে পুড়ে মরছে শোক — পিশাচিনী
ওকে আর আলো দিও না
দরোজা দাও। জানলা দাও। একে একে খসে যাক
শরীরী পরত সব
বাইরের বিস্তীর্ণ ঝড়, এখানে সমস্ত কিছু
ভুলিয়ে দিয়ে গেছে
৩
ছায়াটা বেরিয়ে এল
তার উদ্যত স্তনজোড়া খুঁজে নিতে চাইছে
সন্তানের নির্ভাজ মুখ
One comment on “কবিতা : অরিত্র সোম”
Shatanik Roy
খুব অসাধারণ সব কবিতা