আলো
সবকিছু পুড়ে গেলেও যে ছাইভস্ম
থেকে যায়
তাকে ফুঁ দিয়ে ওড়াতে পারব না
অন্ধকার কার্নিশ জুড়ে মাটির প্রদীপ
রাখা ছিল
কখনও নিথর স্মৃতির মতো
নিজেও সারিবদ্ধ দাঁড়াই
মাথার ওপর যদি জ্বলে ওঠে শিখা
বিভ্রম
তখন স্থির মধ্যরাত। বালির আঁচড়ে তার
ব্যথাটুকু বহমান
সহসা নদীর কাছে গিয়ে বলি,
‘কবিতা শোনাও’
শরীর এলিয়ে পড়েছে। নদী বলে,
‘এত রাতে!’
আলাদা করে নদীটির চোখ বলে কিছু নেই
চিৎ হয়ে দেখে অসংখ্য চাঁদ-তারা। ভাবে ‘সৌন্দর্য্য!’
সব যে এফোঁড়-ওফোঁড়, বোঝে না
আকাশের প্রতিবিম্ব ভেসে যায় নদীটির জলে
ফুটব্রিজ
সন্ধের পর যখন অন্ধকার গন্তব্যের অপেক্ষায় স্টেশনের
সব আলোগুলি জ্বলে উঠতে শুরু করেছিল,
তখনই জ্ঞান হল, ওপরে ঝুলছে ফুটব্রিজ
একদিন আড়াআড়ি হাঁটতে গিয়ে হাইরোডের ওপর
হুমড়ি খেয়ে পড়েছি। সচকিতে ধেয়ে এসেছে
অন্ধকারভর্তি ট্রাক
আবার সেই হর্ণ বেজে উঠল, লাল থেকে সবুজ হয়েছে
আলো।
ট্রেন আসার আগে, দেখলাম, ওপরে ঝুলছে
মহাকাশ, তার নিচে নিরাপদ ফুটব্রিজ, অসংখ্য পারাপার
মুহূর্ত
ছোট্ট স্টেশনের ওপর দিয়েও রেললাইন চলে যায়
ভাবি, কতদূর যাবে ওরা, ওই লম্বা ট্রেনের ভেতর
যারা কয়েক মুহূর্ত থেমে আছে
ছোট্ট বেদীর ওপর, আমিও বসেছি এসে, নিস্তরঙ্গ
বাঁশগাছটির নিচে।
ওই প্রান্ত থেকে বাঁশি বাজল
শিরশির হাওয়ায় দু-একটি শুকনো পাতা
আমার কাছে ভেসে আসছে ক্রমাগত, ভেসে আসছে ভয়
কারা ছেড়ে চলে যাচ্ছে আমাকে, কে ওই দূরের
জানলা থেকে একটুখানি বাড়িয়ে দিচ্ছে হাত
বোধ
জঙ্গলের দেশ। রেলব্রিজ পেরিয়ে সহসা ছুটেছি। সজল
চোখে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাছপালা। ডালে ডালে
এত যে সবুজ ঝুলে আছে, এত পাখি
তবু ক্লান্তি ছাড়া মাথার ভেতরে কোনো বোধ নেই
কোথায় এসে পড়েছি, দূরে, দিগন্ত অবধি ভেসে আছে
বিস্মৃতির মাঠ!
মাথার ওপরে সপ্তর্ষিমণ্ডল
ফুলের গন্ধের মতো প্রবেশ করছে কেউ, দৃশ্যহীন
এত যে পাতায় পাতায় সাজানো হয়েছে ডালপালা
মনে হয়, পাতা নয়। যেন কারও নামের পসরা
4 comments on “কবিতা : সুকুমার মণ্ডল”
সৌরভ মাহান্তী
❤️❤️
Unknown
ভালো লাগলো দাদা💕💕
উজ্জ্বল ঘোষ
খুব ভালো। প্রথমটি আমার ভীষণ প্রিয়।
drmukherjeepratap@gmail.com
খুব ভালো লাগলো । শেষ টি অসাধারন ।