খেলার ছল ও অন্যান্য কবিতা
১.
খেলা চলিতেছে…
আমিও নিবিষ্ট মনে ছিপ ফেলে বসে আছি
ধুরন্ধর ক্রীড়নক আমি, আশা রাখি এইবার জিতে যাব
গুনেগেঁথে দান দেই, আস্তিনে লুকোনো তুরুপের তাস
এইখানে দেশলাই বাক্সে বিনিময় হয় পরাজিত মানুষ
আলো পড়ে এলে ক্রমে দৃশ্যমান হয় ঈশ্বরের বিষণ্ণ মুখ,
তাদেরকে রাস্তা ছেড়ে দিচ্ছেন, মালবাহী ট্রাক, এরপর লুকিয়েছে
কুয়াশা ও বাষ্পের আড়ালে, সিসিফাস এসো, বস পাশে
নারীদের হাতচিঠি লিখেছিলে কখনো? যাজক ও জলজ ঘাস
এইসব অবিন্যস্ত বিষয়ে দুদণ্ড আলোচনা করা যাক,
যে পাথরপিণ্ডের নিয়তি নিম্নগামী, তাকে আরেকদিন টেনে তুলো
আপাতত এই কঞ্চিসর্বস্ব ছিপের আগায় টলটলে ফাতনা মনস্কতা
একে লক্ষ কর, লক্ষ কর ধাতব আঁশ ও শিকারের পলকহীন চোখ
ঈশ্বর জাল কাঁধে এই সন্ধ্যেবেলার পুকুরে নামছেন, স্টেডিয়াম থেকে
কানে ভেসে আসছে ছায়াদের বিবর্ণ উল্লাস, সিসিফাস
খেলা ক্রমে ঘুরিতেছে…
২.
একটা কবিতার থেকে অনায়াসে আরেকটা লেখায় চলে যাই
আজকাল এইসব অসংলগ্নতা আমার ভাল লাগে
কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে বলব ভেবেছিলাম, তবু হল কই
এত বেশি রুপক, প্যাঁচ পয়জার জ্যামিতির ভেতর
তোমার কাছে নতজানু হয়ে বসতে পারিনা আর
আমার ঠিকানার খাতা হারিয়ে গিয়েছে
ভালবাসার কথা চিঠিতে লিখব ভেবেছিলাম
এখন আমার গন্তব্যের পথ অবরোধ করে কারা
দেশ কাল বিষয়ক অস্পষ্ট প্রতিবাদ জানায়
তুমি ভাল আছ জানি, তবু তোমার ব্যাপারে চিন্তা
করতে আজও বেশ লাগে; এইসব অদ্ভুত বিলাসিতা
স্থিতাবস্থা কেটে গেলে দু’একটা রাস্তা আমিও পেরিয়ে যাব
সেদিনের কথা ভেবে খুব মনোযোগ দিয়ে হাতের
নীলশিরার কথা আমি কি চিঠিতে লিখিনি আজ??
৩.
প্রায় তিনমাস আমি কোন কবিতা পড়িনি
কিছু লিখিনি তাও প্রায় মাস ছয়েক হবে
আমি কি চিন্তিত হব?
জানালার ওপার থেকে যেসব সারেগামা ভেসে আসে
তাদের উৎপত্তি বিষয়ে আমি আগ্রহ বোধ করিনা আজও
অথচ দূর থেকে দেখতে ভাল লাগে… একথা ভেবেছি অনেক
আলাদা… একক অর্থে নয়, সামগ্রিক ভাবে
পিঁপড়ে ও মৌমাছির ন্যায় বড়ই আশ্চর্যময় এই মানব জীবন;
যেভাবে গাণিতিক নিয়মে সারিবদ্ধ পিঁপড়ে আচরণ করে
একটি নির্দিষ্ট জলের রেখা বরাবর তাদের হাঁটা বর্ণনা করা যায়
অবিকল, এসব ভেবে দেখেছি আমি
যেমন প্রতিটি কবিতাই এক একটি ভিন্ন স্বগতোক্তি
তথাপি সামগ্রিক ভাবে একটি নির্দিষ্ট উপন্যাসে পরিণত হয়;
এই অনুরূপ উপায়ে দূর থেকে জটিল সমবেত মানবীয় আচরণ
হয়তবা ঠিকঠিক নির্ণয় করা যায় সঠিক গাণিতিক সঙ্কেত দ্বারা;
মৌমাছি, পিঁপড়েদের সমতুল ন্যায় ঈশ্বর মানুষ অবলোকন করেন কিনা
তা আমায় আজকাল প্রায়শই ভাবায়
বলা যেতে পারে শেষ তিনমাস কবিতার মধ্যে না খুঁজে
ঈশ্বরের ন্যায় মানুষের থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে
আমি তাঁর গাণিতিক অভিসন্ধি বুঝতে চেয়েছি।
7 comments on “কবিতা : অরিত্র চ্যাটার্জি”
জয়ীতা ব্যানার্জী
প্রতিটি লেখাই ভালো লেগেছে।
Aritra Chatterjee
Onek dhonyobad 🙂
Unknown
লক্ষ রাখছি তোমার লেখায় । লিখে যাও । শুভকামনা ।
Unknown
স্নেহাশিস রায়
Aritra Chatterjee
অনেক ধন্যবাদ দাদা
Shirsha Mondal
প্রতিটি লেখাই বেশ ভালো।
Aritra Chatterjee
ধন্যবাদ গো