শেখা হল না
একদিন আমরাও চেয়েছিলাম বটে
আলো দিয়ে লেখা হবে মানুষের নাম
ভালোবেসে বধির হবে শ্রুতি
দৃষ্টিতে যে স্পর্শকাতর অন্তিম অশ্রু বাষ্প
তাই হবে উপজীব্য
ভালোবাসা শংকা ডেকে আনে বুঝিনি তখন
তাই নাগাইসারি থেকে সামসিং পাহাড়
অনায়াসে পেরিয়েছি
সেসব বিকেলে জসিডি মধুপুর গিরিডির
টিলায় যে সূর্যাস্ত বাজে ঝড়ে বিস্ফোরণে
কখনোই কুয়াশায় ভেজে নি
কাশ্মীরে কন্যাকুমারীতে মীনাক্ষী মন্দিরে
শেখা হল অনেক, তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে
পাহাড়ের কাছে সংযম
আর সমুদ্রের কাছে ভয়াল ক্রোধ
শুধু কীভাবে তুমুল বর্ষণে ধিক ধিক করে
জ্বলে চিতা এখানো শেখা হল না…
নারী পরিচয়
অক্ষত দুপায়ে এগিয়ে আসছে কেউ
এ খেলা পুরুষের খেলা
খেলা শেষ হলে মনে রাখবে না কেউ
সবুজ ঘাসের মাঠ ,শূন্য গ্যালারি
বাদামের খোসা, প্রথম দিনের মতো শুধু এক
মায়াবী সুন্দরীর খোঁজ চলবে
তখন তুমি পালাবার পথ পাবে না
ঋষি হলেও পুরুষ তো বটে
কেউ মাতৃপরিচয় জানবে না তোমার মা যে শুধু
গর্ভধারণের আধার
অপেক্ষা করবে ছেলেরা কবে বড়ো হবে,
পাপীয়সী,তারাও যে তখন এক একটা
আস্তপুরুষ …শেষ সম্বল তবে কি জঙ্গল?
বাঘ ভল্লুক শেয়াল কুকুর দের জগৎ মানুষের সমাজের চেয়ে হীন কিছু ?
ভাবো তুমি, বিশ্বসুন্দরী
ভাবতে থাকো সেও কিন্তু পুরুষের চোখে…
মানুষের ছায়া
স্বাধীন সব মণিমুক্তো গলে হয়ে যাবে নদী
যখন তুমি সব হারাবে জ্বেলে দেবে ভৈরবী
ডুবে যেতে যেতে উঠে যেতে পারো ঘূর্ণির মাঝখানে,ধরা পড়ে গেলে গানের গহন
উৎস ও পরিণামে…
রুপোলি আলোয় ভেসে চলে যায় নষ্ট চন্ডালিকা
শিকড়ে শিকড় আটকে রয়েছে ভালোবাসাটির চিতা,দুখীকে শুধু ই দু:খ দিওনা খানিকটা প্রেম
দিও,যার নাম বাসমতি যার নাম লি ও …
ভাঙা সাকোতেই পারাপার করে হাওয়া
আজ এখানে কোথাও নদী নেই শুধু কালো
মানুষের ছায়া, শুধু কালো মানুষের ছায়া…
ছায়ারা ফেরেনা ঘরে, ছায়াদের বাউল স্বভাব
রেখে যায় ধুলোবালি আর কিছু মায়া…
উড়াল
তুমি যখন প্রতি রাতে আমাকে প্রশ্ন করো
সেই হাতঘড়ি সেই ঝর্নাকলম রক্তবর্ণ পাথর এখনো আছে? আমি নি:শব্দে সেই কথাদের
ফের কুড়িয়ে পাই ,বন্ধুরা এসব বোঝেনা
অফিস থেকে ফিরে তারা সটান ক্লাবে যায়
শান্ত ভাবে পান করে তারপর বাস্তবতার বিভ্রমে
তাদের চোখ ক্রমশ লাল হয়ে ওঠে
সঙ্গম শেষে সিগারেট ধরায়
তারা জানে যে কোন গল্প ই আসলে অসম্পূর্ণ
জীবনের মতোই, তুমি জানো
যে মানুষ বিকেলে বা সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করবে
সেও কি কোনও পরিকল্পনা নিয়ে সকাল শুরু করে না, প্ল্যান করে রাখে না
কাল পরশু তরশুর জন্য
চিরদিনই ধ্বংসের উড়ান যন্ত্রণার মানচিত্র বদলায়…
ছায়াযাপন
নদীর ধারে বসে আছে প্রেমিক, সারা শরীরজুড়ে
বিজ্ঞাপন একটি পুরনো আর মেরুন রঙের গাছ
এখন হাওয়া দিচ্ছে খুব, নদীর জল কাপছে
দূরে নৌকো কুকড়াহাটি যেখানে মেঘেরা নেমে এসে পা দোলায়…
এখানে নাটকের মহড়ায় শেখানো সংলাপ নেই
ভালোবাসার অভিমানে সবাই নীরব
স্মৃতিগন্ধ ঘুরছে ফিরছে পাক খাচ্ছে
ভূমিকা টীকা যাপনের স্থির চিত্র সব
রাত বাড়ে বাকিরা ফিরে যায়
রোজ ই একটু একটু করে জল নেমে আসে
ধূসর সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে
প্রেমিকের ছায়া…
Leave a reply