মুদ্রানর্তকীর কাছে পাখি সব শিখে নেয়। বৃষ্টির জলে ভিজে পাক মারে, শিস…
নীড় দোলে নৃত্যের তালে তালে
\’ আজ এতো ভোরে ! \’ লেন্স তাক করে…উড়ে যায়
পুড়ে যায় ওড়নাহীন পাখির শরীর
জমজ
[\’সে আমার ছোটো বোন..\’ : মান্না দে]
ডাকছিল। ডাকছিলাম। ফোটেনিতো! ফুটবে কি?
রোদ ওঠে। মুক্ত ঘাস ! ওঠ এবার। উঠবি না!
দোয়েল ডাক?লতার-বোন?সাবাস সই!কি মজাই।
ফুল পাঠায়। মেসেনজার। স্ক্রিনটাচে। বিশ্ব আজ।
ওঠরে তুই ? ভর কোঁচড় ! তুলবি না? জুঁই-বেলি।
আজ রবি!কোলের-ভাই।পোলিও-ডে।জিব বাড়াস
ঠেলবিনা?ভাই-কোলে।গড়ায় চাকা।জোর কদম…
আসছে মনে। মা মরা। কোল কাঁদে। হাসছে ভাই।
[উৎসর্গ : পিনাকী ঠাকুর]
ইমোজি
লিখে পাঠিয়েছিল হোয়াটস্অ্যাপে : ঢঙি ঢঙি ঢঙি… মেইনলাইনের ঢ্যাঙা বকুল গাছ থেকে ঝরে
পড়ে শুধুই স্মাইলি ইমোজি …
যত রেগে যায় ঝাঁকড়া-তমাল—ততই হার্টবিটের লাল দপদপে আলো সারা আকাশ ছড়িয়ে
পড়ে… গরিবের মোবাইল স্ক্রিনে
–ফাঁকা কি একটা লোকাল, হুহু শব্দে বেরিয়ে যায়
গে
সেই যে ইনস্টাগ্রামে : \’দুটো ইতরের ছবি..\’ ঘনিষ্ঠ কোকিলের গায়ের উপর উঠে যাওয়া। গুঁতো…
সেই যে ফেসবুক জুড়ে : অমুকের ঠোঁট-স্তন-যোনি
আঁকা যোগেনচৌধুরী; \’যাচ্ছেতাই। তোর মতো নয়।\’
এ কি সত্য সকলই সত্য হে আমার চিরভক্ত
সেইযে পাশের বাড়িতে বাজা।টিফিনের বাথরুমে : বুকে বুক-চাঁপাফুল ওষ্ঠ-অধর ; সিপিয়া রঙের জাম চুষে ধরা পড়া
পুণ্যিপুকুরে নেমে দু-জনায় জ্যোৎস্না-তোলপাড়; সেই যে স্বপ্ন মনে হয় : রথের-ঘোড়ার লিঙ্গ
গুহ্যদেশে কি গোলাপি সোহাগ–শুয়ে-বসে জলতল আলোয় আলো…
\’চল্ পালাই,তোকে নিয়ে\’ সাইকেলে সেই মধুপুরে–
কৃষ্ণ-সুদাম শুয়ে থাকুক পাথর খোদাই
\’সেই তোকে আর না পাই যদি?\’ \’তোকে?\’ একদিন নিধুবন তছনছ।
উড়ে যায় কালো কুচকুচে
—তোরই একান্ত কোকিল
জম্বুদ্বীপ
স্লিপিং পিলের রাংতা খুলে বেরিয়ে পড়েছে আরও
একটা রাত। ডাইনে অরুন্ধতী অশ্লেষাক বাঁয়ে বসিয়ে একাদশী-চাঁদ
তুমি মাটি গোলমেলে টবে টবে গঙ্গারপলি।গাছের
বিরক্তি বুঝে ঝামেলায় যাওনা মোটে টবের-বাগানে
খুরপি এসে আলগা করে–কাঁদ মাটি কাঁদ…
শিকড়ে বন্ধুতা ঢালে মেঘেরা নিবিড়। ফুল পাতা
পাখিদের ডাকে ল্যান্ড করে ঘাসের মাটিতে…
পৃষ্ঠা খোলা পড়ে থাকে প্রিয় \’মেঘদূত\’
পূর্বমেঘ ঘুরে ফিরে দেশ ও বিদেশে ভয়াল মারি-র মুখ।
অতিমার, মুমূর্ষুর দেশ। প্রভুপ্রিয়া পড়ে থাকে।
তবু মেঘ জম্বুদ্বীপে নেমেছে নিখুঁত
যুগলবন্দী
আমারও তো কথা ছিল কিছু–প্রতিটিবাবার থাকে
অভিমানী নদীজলে মন্ত্রছোঁয়া ছু , চোরাস্রোত,নীচে
তার আবহসংগীত
জলপাতা ছুঁয়ে-ছেনে
পূর্ণিমার জলে শুধু জল বেড়ে যায়…
কথাতো আমারও কিছু কাটাঘুড়ি ঘোড়ানিম গাছে
লটকেছে বহুকাল–স্ট্রিটলাইটের জটিল তামার
খাঁজে নিরালম্ব পক্ষীডিম খোসা
ডাকনামে প্রথম কদম-গন্ধী..ফুল
অকাল বাদল ঝড় ঘনায় দিনভর…
আহ্বান
ডাকে , ঘোরানো সিঁড়ির প্রতিটি কোনা ডাকে পদছাপ–প্রতি জন্মের। ইতিহাস-ক্লাস ডাকে ট্রিম
করা শিবাজীর দাড়ি, আফজল খাঁ, বাঘনখ আর
রক্তাক্ত নখের নীচে ডুবন্ত সূর্য –ডাকে…
খসে পড়ে পিয়ালের পাতা সকরুণ ডাকে–মজা
হাজা নদী। মধ্যে তার অবৈধ পেটের মতো চরা
–করুণ দু-হাতে ঘিরে দু-দিকের সামান্য প্রবাহ…
পূর্বপুরুষের স্রোত, বকাটে ভাতারের মতো ডাকে
প্রতি বর্ষায় ; যেন, অদূরে সঙ্গম…
নৌকাবেয়ে স্কুল-সঙ্গীকে ডেকে নেয় বরাবর চরা-পড়ুয়ারা
দোল \’২০
তোমরা যারা সাতসকালেই-রক্তপলাশ শিমুলডাল
তোমরা সব দু-চারলাইন ফসকাগেরো স্পর্ধা খুব
আমরা লিখি \’এই বয়সে বাড়
বেড়েছে\’ কোঁচকা-ভুরু
তোমরা লেখো ক্লিভেজ-পিঠে- রবিঠাকুর \’মরণ রে
তোমরা যারা পাড়ায় পাড়ায় \’হাতজোড়া সব অন্য
বাড়ি।\’ তোমরাই সব হাত বাড়ালে– \’বিষাক্ত-তিল পাগলে যাবি…\’ কিরো বলেন : \’এ্যাসাইলামের নিচ্ছি খোঁজ\’
তোমরা যারা চিনের-গুলাল বসন্তে নাও বরণ করে
তোমরা ছাড়া কুশল থাকি কেমন করে আমরা সব!
7 comments on “কবিতা : চন্দ্রনাথ শেঠ”
সূর্য মণ্ডল
প্রতিটি কবিতার মধ্যে জড়িয়ে আছে একধরনের মৌনতা।
দেবাশিস ঘোষ
ভালো লাগলো। শুধু মাত্র অপূর্ণ ক্রিয়াপদ দিয়ে পংক্তি শুরু করাটা বেশ লাগল। মুদ্রা নর্তকীর মিশেল প্রয়োগও নতুনত্ব।
স্বপ্নকমল সরকার
এই তো শব্দেরা মন্ত্রবলে ডানা মেলে দিচ্ছে।এই তো মেঘসোহাগী আতুসি ছন্দেরা জেগে উঠেছে কলা বউ সেজে। এই তো সিদ্ধিনাথ বরাভয় দিচ্ছেন চন্দ্রাহত কবিকে…
Chandranath Seth
ঋদ্ধ হলাম প্রিয়।
chayan
দুরন্ত
সুকৃতি সিকদার
জ্বলন্ত হুস, যমজ,জম্বুদ্বীপ, যুগলবন্দী, আহ্বান খুব ভালো লাগলো।
arh1967
কবিতাগুলি সুন্দর।