১.
সারা শরীরে সমুদ্রের নোনাজল চিকচিক করে…
সমুদ্রস্নান সেরে এসে রমণে যাবে কন্যা!
শরীর শীতল হয়ে আসে
তার অবয়বয়ের ছায়া দেখেছিমাত্র – আবরণহীন!
তারপর,
তারপর আবার নিজের ওপর লজ্জা হয়!
মনে পড়ে –
চামড়ার পোশাকের নীচে একটা নরম ‘তুমি’ আছো।
২.
মাইলের পর মাইল হাঁটতে থাকা শ্রমিকের জন্যে কিংবা মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে যে ছেলেটা বলেছিল – ‘ভাত চাই, কাজ চাই, ছাদ চাই’ তাঁকে তুমি আর কোনদিন দেখো নি…
ভীষণ ঝড় হল –
পরের দিন শিরাকাটা ছেলেটাকে পাওয়া গেল চিলেকোঠা থেকে
সবাই বলল আত্মহত্যা!
আসলে, আবার খুন করল রাষ্ট্র –
একটা রুদ্রপলাশ আর টুকরো করা সমস্ত মার্কশিট রাখা ছিল গীতবিতানের ভাঁজে।
৩.
আজকাল বড্ড ক্লান্ত লাগে!
স্বপ্ন-প্রেম-যৌনতা-রাজনীতি এমন কি কথা বলতেও
এক গোপন শত্রু যেন আমার শিরার ভেতরই বাস করছে
অন্ধকার ভালো লাগে;
খাদের ধারে এসে দাঁড়ায় – ফেরার কোনো তাড়া নেই
আরও একটা দিন আসে,
ঘর-গেরস্থালির কাজ সামলে মা খেতে দেয়!
আবার, রাত্রে আমি সেই খাদের কাছে যায়।
৪.
একদিন আসবে, যেদিন কোনো মোমবাতি মিছিল হবে না
বুক-নাভি-যোনি বাদেও নারীর পরিচয় হবে মানুষ বলে
একদিন নিশ্চয় হবে!
রাস্তার ধারে কেউ অনাহারে ঘুমাবে না
যুদ্ধ থেমে যাবে
অলক্ষ্য থেকে বাজবে লালন কিংবা লেনন
সমপ্রেম কিংবা কাম কোনোটা নিয়েই সমাজ হাসবে না
রাজনীতি হবে স্বচ্ছ
অনাহারে শিল্প কিংবা শিল্পী আত্ম্যহতা করবে না
বন্ধ হবে রাষ্ট্রীয় খুন!
এই এতসব ভাবতে ভাবতে অভিধান ঘাঁটছিলাম, চোখে পড়ল একটি শব্দ – ‘ইউটোপিয়া’।
৫.
শাদা ক্যানভাস যেন রক্তাভ হল আঁচড়ে
রাত্রি ছিল আলকাতরার থেকেও ঝাঁঝালো
বুকের মধ্যে জমে থাকা শব্দগুলো ভুলে গ্যাছে দোয়েল ,ফড়িং কিংবা প্রজাপতির জীবন!
এই অসুখের কোনো নাম নেই, ওষুধও নেই।
মনে পড়ল, অতীত জন্মে শ্যাম এসে বসেছিল ইমন কল্যাণে;
পথ হারিয়ে, ঠিকানা ভুলে আজ সে হেঁটেই চলেছে –
পেরিয়ে গ্যাছে মৃত্যু মিছিল, লাল হয়ে যাওয়া গীতবিতান।
সে হাঁটছে
প্রতিদিন, খুঁজে পেতে শিকড়কে।
Leave a reply