কান্না, জন্মতিথি
আলপথে হাঁটা
দূরে বহুদূরে নিমগ্ন কান্নায় শিশু
সদ্যপ্রসূতির হাসিমুখ, আনন্দাশ্রু
ধানের গায়ে শুক্ল চাঁদের সম্ভাবনাময় আলো
দুর্গানবমী, উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্র–
তুমি ফেলে এসেছ অনেকটা পথ, অতীত আবদার
বাইফোকালে সূর্যের পোড়া রং
যে পথ সামনে, হাঁটছ পা ফেলে
কত কান্না পেরিয়ে এসেছ, ভাবতে থাকো…
- ৪ অক্টোবর, ২০২০, রাত ২.৪৫
ফজরের আজান
ঘুমোতে যাওয়ার আগে একমনে ফজরের আজ়ান
শুনছ, বুঝতে চেষ্টা করছ ভোরের রাগ,
বেশ সুরেলা। তোমার মনে পড়ে ছোটবেলা,
উত্তর কলকাতার মসজিদ, মৌলবিসাহেব, আজ়ান
তুমি বুঝেছিলে রামকেলি, সেই প্রথম।
চোখেমুখে জল দিয়ে অন্ধকার শূন্যের উদ্দেশে
মন্ত্রপাঠ কর
ভোরের বাতাস রামকেলি সুর ধরে
ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দাও বিছানায়…
- ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, রাত্রি তৃতীয় প্রহর পেরিয়ে
নারীজন্ম
মৈত্রয়ী দেবীর ছবি এঁকেছিলেন রবীন্দ্রনাথ
একটি ছবি তুমিও আজ পেলে,
ভারী সুন্দর পদ্মগুহার উন্মীলন
ছবিটি তোমাকে হেমন্তের ধানের দিকে টানে। অথচ
তুমি শুনতে পাচ্ছ পাতাঝরার শব্দ
তোমার মনে পড়ছে কোনো যুবক আঁকতে
চেয়েছিল
তোমার পোর্ট্রেট
- ২৭ নভেম্বর, ২০২০, রাত ৩.১০
ইনসমনিয়ার রাতগুলো
রাতের পর রাত জেগে বসে থাক, কী কর?
ইনসমনিয়া আছে? ঘুমোতে পার না?
লাইটের নীচে পর্দা দোলে পাখার হাওয়ায়–
খুলে রাখ হিজিবিজি খাতা, কী যে লেখ !
তার উপর ছায়া ফেলে লাইট আর পর্দা ।
তুমি চেষ্টা কর সেই ছায়াকে সরাতে,
তেরছা হয়ে বস। ঘুরতে থাক ছোট একরত্তি
টেবিলটা নিয়ে।
পর্দা দুলতে থাকে ছোট টেবিলে।
এই টেবিল তোমাকে কিনে দিয়ে কন্যা
বিদেশে ফিরেছে।
বোকার মতো ডুকরে কেঁদে ওঠো…
- ২২ জুন, ২০২০, রাত ২.৫৫
বিহ্বল সময়
মেঘের দাপট শান্ত হয়ে এলে
পায়ে পায়ে ছাদে উঠে এলে
তার আগে,
সিঁড়ির শ্যাওলা-সবুজ মার্বেল
তোমার উদ্বিগ্ন পা ফেলার সাক্ষী।
উড়োজাহাজের ডানায় লেপটে
কিছু মেঘ গতি বদলে অন্য পথে–
দুর্বল শরীর একা একা খুব বেশিদূর
ভেসে যাওয়া যাবে না, মেঘ জানে
চলার পথগুলো কোনো না কোনো
দুর্বলতায় বদলে যায়
অনেকক্ষণ একটা ফড়িং উড়ছে
ওর শরীর থেকে ঝরে পড়ছে
বিকেলের মরা আলো
বিদ্যুৎ চমক জানাচ্ছে মেঘেরা আবারও ঘন…
- ২৮ জুলাই, ২০২০
2 comments on “চন্দ্রদীপা সেনশর্মা”
Debasis
নারীজন্ম লেখাটি ভারী ভালো লাগলো।
Subal Dutta
খুব সুন্দর