প্রকৃতিদিবসে লেখা
একটা গোলবারান্দায় বসে এইমাত্র আমি
মঙ্গলগ্রহ ঘুরে এলাম।
সেখানকার অলিগলি কলোনিপাড়ার মোড়
চৌমাথা,সাতমাথা,রাস্তাঘাটে গতিসীমার ঘড়ি
দেখে এলাম গোল গোল খড়ের কুঠির মতো দ্বীপ
সেখানে মাটির উনুন আর বাসনকোসন
তারাখচিত শপিং মলের মতো
মুক্ত আকাশ আর মধুচাঁদযাপনের গদি…
গোলবারান্দা চড়ে এইমাত্র দেখে এলাম
আমার ছোটুর সংসার
শুষ্ক হাড়ের মতো পঞ্চবটি থেকে।
কোচগেড়িয়া
এই পুকুরে স্নান করেছি বহুবার
ডুব দিয়ে দেখি দুই হাত
সেখানে সোনার পালক।বিনতাপুত্রর মতো
পুকুরের ধারে কোচ বন।
রামচক মরামের মতো চেয়ে বলে
ওই যে সভ্যতার আপিস আঁকা আছে
ওখানেই একটা সময় এক মস্ত বকুলগাছ ছিল।
এ গ্রামের পুকুরে ডুব দিই
রায়বাড়ির মন্দিরে বেজে ওঠে সন্ধ্যা আরতি
রাতে চুপিসারে তুর্কি সেনার মতো ঢোকে ওরা
মাটি লেপে দেয় অতিমারীর শবের কপালে।
পলাশডাঙার কবি
কবিতার শব্দগুলো আজকাল কেমন ফুটিফিটা মাটির মতো চেয়ে থাকে।
ঝড়ে ওপড়ানো কলাবনের মতো অগোছালো…
দখিনদিকের ঘরে কোনও এক সময়ে গ্রামোফোন বেজে উঠত সুরে
যেদিন নামিয়ে আনলো ওরা
চেনা মুখ,চেনা পাঞ্জাবি ।
পরিবেশদিবসপালনের মঞ্চের মতোই একটা মিথ্যে শবের যান
কবিতার শব্দগুলো তার ঠোঁটে
মিথ্যে অসুখ যেন
শব্দরা কেমন যেন দৃশ্যপটের মতো
অবয়বহীন হয়ে চেয়ে আছে দখিনদুয়ারে
পিন ভেঙে গেছে তাই
গ্রামোফোন আর বাজবে না
হাতঘড়ি
ঘড়িতে দিচ্ছি দম ঘরবদলের মতো
এঘর থেকে ওঘর কতো বইখাতা
এক এক পাতায় আমি এক একটা রাত খুঁজে পাই
পাতার অক্ষরে বসে থাকে সব কান্না আর হাসি
দম দিয়ে স্প্রিং বড়ো করি
ঝপাং ঝপাং শব্দপাঠ
সময় মিলে যায় মাঝেমাঝে
কখনো বাতিদান হয়ে যায় নীরবে
হাতঘড়ি দম দিই
সকাল দুপুর
মনে মনে ভাবি
ফিরে আসবে ছটা বাজলেই।
লক্ষীকান্তপুর লোকাল
ঘা ঘেঁষাঘেষি আর মাছের কালিয়া
আমার আজ লক্ষ্মী যাবার দিন
লাইনের দুধারে ঝুপরি তাকিয়ে প্রশ্ন করে
কতো মধু আনতে পারলি আজ বাঘিনী বাঁচিয়ে
লোকালে ছানার দলা তাকে ঘিরে নিজের জীবন
ঘামের মতোই ঘিরে ধরে ভালোবাসার রেণু
অচেনা বাক্স তাই মন কষাকষি করতে নেই
চুলে বিলি কাটা আর জানলার গরাদ
ঝুপরি যাচ্ছে সরে
আমার আজ লক্ষ্মী যাবার দিন
ভোর হলে চমক ভাঙলে দেখি
শুনশান রাতের প্ল্যাটফর্মে বসে
কী যেন আঁক কষছে পাগল ঠাকুর।
Leave a reply