তরুণ কবির আত্মপ্রকাশ
তেমন কোনো চিঠি
মহাকাশের ছবি যে খাতায় আঁকা হতে পারে
তেমন কোনো পৃষ্ঠায়
কিছু ফুল, শুকিয়ে যাওয়া
আর বাকি খাতাটা শুন্য
কোনো চিঠি লেখা হয়নি।
নিঃশব্দ একটা খাতা
পাহাড়ে হারিয়ে যাওয়া
সন্ধ্যা নামলে শুধু ময়ূরের ডাক
যদি তেমন কোনো চিঠি লেখা যেত তোমায়?
আর তারপর স্পেসশিপের আলোয় বাড়ি ফিরে
সাদা খাতায় পাওয়া ফুল আর মহাকাশ
লাস্ট ট্রেনের পর
রাতের উপর রাত ফেলো
বিষাক্ততা বড়োই সহজ তখন।
কত রাত ফেলবে!
কম্বল নেই
ফ্যান বন্ধ লাস্ট ট্রেনের পর
আর কি না ধরলাম!
কার ধারে বসে নেই বল আমি,
কার মাথায় ভাঙছিনা লৌহমুষ্টি
থ্রু ট্রেন চলে যাওয়ার অন্যাউন্সমেন্ট হয়
থ্রুউ- ট্রেন, ঝক ঝক, ধক পক
বন্ধ দোকান ও লাস্ট ট্রেন না ধরা
প্রাণীর মতোনদের বুকের টিন কাঁপিয়ে,
থ্রুউ- শুয়ে পড়ো আর নাহলে উদমা ক্যালাও
এমিনিতে সহজে রাগ- নস্যি টানা
আমার দায়ের মধ্যে পরেনা
পরলে সারারাত শুয়ে ছায়া টানতাম,
শুধু ছায়া
লাস্ট ট্রেন নাধরা প্রাণীর মতন যারা,
তাদের খুব ছায়ার অভাব।
বাকি সব না থাকলেও লাগবেনা
ছায়া চাই
যাব ঠিকই
আমি এবারও যেতে পারলামনা
চারিদিকে অজস্র সিড়ি
সরীসৃপের শিরদাঁড়া
অথবা কোন সরীসৃপ হয়তো নেমে আসবে
এই হওয়ায়, আমার ঘন চুলে
কোনো গ্রীষ্মের দুপুরের মায়ায়
তুমি ফিরে দেখবেনা ভাবো
অথচ সিঁড়ি, নিজেস্ব বুকে
গুমপাড়ানি গান
আর রেলিংটা লোহার, ঠান্ডা
কার ডাকবাক্সের ঠিকানায়
পিনকোড ঠিক লেখা বলো!
আমি এবারও যেতে পারলামনা
জলীয় বাষ্প জমা জানলার কাঁচ
শব নিংড়ে রাখা নির্যাস থেকে
ধর্ম গড়িয়ে পড়ে,
তিন ছক্কা ঘুরে অনাবৃষ্টি
ওরা মানুষ নয়, কামড়ে দেখো
ওগুলো মাংস নয়!
মাংস সুন্দর করে সাজানো থাকে
জলীয় বাষ্প জমা কাঁচের ওপাশে
দেখো জিভ কি বলে
চেরা নাকি কাটা?
কাঁকর বিছিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।
বিবাগী ঘুম।
ঘোড়ায় চড়ে সে চলে যায়
ধুলো রং পাল্টায় চোখ মেপে
কাঁকর বিছানো চোখ, ঝিট্ মারো
চড়াৎ করে ফটুক পাঁজর
জলীয় বাষ্প জমা কাঁচ- তোমার জানলা
তোমার শব, তোমার ধর্ম, তোমার দেশ
বোতাম
তোমাকে ডাকতে গেলেই,
গলার ভিতর কাঠ টের পাই!
কই আমার তো পাতা হয়না!
রোদের দুপুরে যতই দাঁড়িয়ে থাকি
আমার তো ছায়া পড়েনা।
তোমার উপহার দেওয়া জামার বোতামে
রোজ মেঘ জমে।
মেঘ মেঘ মেঘ বোতাম আটকে
গলা অব্দি, জল নামেনা।
নৌকা ভারে নুয়ে যায় ডান দিকে,
আকশিতে কামড় পড়ে
লম্বা হাতায় মুখ ঢাকতে গিয়ে দেখি
হাতের বোতামটা খুলে পড়ার মতন হয়েছে।
ভোর
রাতের নিস্তব্দতা সাদা পালকে ঢাকা
রাজহাঁস, আমি দেখেছি
ভোরের আগের নীল আকাশে উড়ে যেতে।
তাদের ডানায় তখনো শরতের কাশ ফুল লেগে,
জলের নিচ থেকে তাদের পরীর মতন লাগে।
আমি এমন বহু পাখি দেখিছি, পরী, গাছ
আর কিছু অদ্ভুত প্রাণী, যারা হটাৎ দলবেঁধে
সেই রাজহাঁসের উপর ঝাপিয়ে পড়ে,
উপড়ে ফেলে সব কাশ ফুল আর পালক গুলো।
রাজহাঁসটা যেন তখন প্লেটে সাজিয়ে রাখা টার্কি
ছুরি শানের শব্দে বেঁচে থাকা পাখি গুলো
গলা চিরে ডেকে ওঠে
লাল, ভেজা আকাশটা থেকে
রক্ত চুঁইয়ে পড়তে থাকে নদীর বুকে,
জলের নিচ থেকে মনে হয় ভোর হলো।
এমন ভাবেই রোজ ভোর হয়,
আর তারপর দিনের আলোয় সব ঢাকা পড়ে যায়।
আমরা শুকতারা হয়ে নদীর জলে ডুবে বসে থাকি
যাতে রক্তে ভেজা পালক গুলো
আমাদের শরীরে না লাগে।
নাম : তনুজ মল্লিক
মায়ের নাম : শিল্পী মল্লিক
বাবার নাম : মোহিত মল্লিক
জন্ম : ১৫ জুন ১৯৯৯, কলকাতা
শিক্ষা : ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রপআউট
প্রিয় কাজ : বই পড়া, সিনেমা দেখা
প্রিয় উপন্যাস : ঘুণপোকা, নীললোহিত, Kafka on the shore,
প্রিয় কবি/লেখক : জয় গোস্বামী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, Franz Kafka, হুমায়ুন আজাদ, Haruki Murakami
প্রিয় চলচিত্র পরিচালক : Kim ki Duk, Abbas Kiarostomi, Wes Anderson
Leave a reply