অন্ধকার থেকে আলোয়
নিয়মিত আসতেন একজন লোক , লম্বা এবং খুব কালো
শুধু ঝকঝকে সাদা দাঁত যেন সারি সারি জুঁই
ফুটে আছে রাত্রির নির্জনে
নিঝুম চারিধার প্রশস্ত গ্রীবায় জ্যোৎস্নার শুভ্র রিবন
এ সময় তিনি
একাকী উলঙ্গ হতেন নদীর পাড়ে
আর এক কোমড় জলে ঠায় রাত্রি তৃতীয় প্রহর পর্যন্ত
দুই হাত উপরে তুলে দাঁড়িয়ে থাকতেন
নক্ষত্রের চোখে চোখ রেখে
তার শরীরে তখন লোমশ ভাল্লুকের কালো মসৃন ঢেউ
জীবনদায়িনী
পাশেই ছিল, দেখিনি
কলকব্জা নড়ে উঠতেই
ভ্রুভঙ্গে চমক
অঙ্কে ফল্গুধারা
আড়মোড়া ভাঙে গতরের সরীসৃপ
নিখিল ক্রমশ আলগা হু হু বাতাসে
শিথিল গ্রন্থিসকল
ঝরে পাতা ঝরে বালি ধূ ধূ মরীচিকা
ধ্বসের কিনার ঘেঁষে উঠে আসে জীবনদায়িনী এক শল্য
অপ্রিয় ধুলো
বিষাদের মেঘে জমেছে অপ্রিয় ধুলো
সরাব যে, সাধ্যি নেই
রাত্রি ঘণ, উপুড় হয়ে বসেছে চাঁদ
তুলব যে, পারছি না
এততসত্ত্বেও কাঁটা চামচের শব্দে
নদী নেমে যায়
এত স্রোত, তবু—
ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছে রাত
অনন্ত ভৈরব
রাত্রি দাঁড়িয়ে ছিল একাকী
নক্ষত্র ছিলনা৷ অন্ধকার৷ চুপ৷ সাড়াশব্দহীন৷
পায়ে তার বেড়ি, কন্টকে কন্টকে বিদ্ধ
নিরুচ্চার কন্ঠ, বিষ
সুউচ্চ পর্বত, হিম৷ শান্ত চরাচর
নতজানু মেঘ,
বরফ সঞ্জাত বিন্দু বিন্দু শ্বেত বৃষ্টি
শিরে পড়ছিল তার
তিনি স্থির, শঙ্কাহীন অনন্ত ভৈরব!
হাঁটছি তো হাঁটছিই
এই তো হাঁটছি, হাঁটছি তো হাঁটছিই
সকাল থেকে রাত্রি, রাত্রি থেকে সকাল
জীবন থেকে জীবন—
অবিরাম এই হাঁটা, অনিঃশেষ পথ
শুধু হেঁটে যাওয়া আর দেখে যাওয়া
না, দেখার শেষ৷ না জানার
অসীম শূন্যতার ভিতর শুধুই ডুবে যাওয়া
এছাড়া আর কিছুই করার নেই যে—
তাই, নাম-গোত্র-রঙ-বর্ণ-ধর্ম-দেশ পাল্টে পাল্টে
ক্রমাগত হেঁটে যাচ্ছি
পায়ে শত বৎসরের ধুলোবালি রেনু হয়েই
ছড়িয়ে পড়ছে এ-ব্রক্ষ্মান্ডে
যা তুলে তুলে মেখে নিচ্ছি গায়ে মাথায়
মুহুর্তেই ক্লান্তি যাচ্ছে সরে—
জন্ম নিচ্ছে নতুন এক শরীর, নতুন অভীস্পা
Leave a reply