তিন রঙের তিনটি কবিতা
ম্যাজেণ্ডা রঙের বিকাল যে তোমার পছন্দ
সেটি আমার অজানা নয়।
ভাঁজ খোলা কাপড়ের ভেতর থেকে
পেন্সিলে আঁকা পেচানো ধুপগন্ধ
ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে ধুনুচি বেয়ে
তোমার উচ্চকিত বিকালের উঠানে।
অথচ দেখো আমার বিকাল সাদাসিদে
ম্যাড়মেড়ে বিকাল।
তেলে ভাঁজা পাপড়ও ত্যানাতেনা
হয়ে পড়ে থাকে চায়ের পিরিচে।
চিনি ছাড়া চায়ের কাপে বারবার
সশব্দ চুমুক বিকালে
দৈনিক খবরে মুখ গুঁজে তুমি বিড়বিড় করো
মনোযোগী পরীক্ষার্থীর মতো।
আমি ফেলমারা মার্কসিট
একই ক্লাসে ফি বছর খাঁচাবন্দি পাখি
আর তুমি উচ্চকিত বিকালে পরিযায়ী পাখি
নয়াজলে আঁক আত্মপ্রতিকৃতি
চোখ মেলে তবু বাইরে জলরঙে আঁকা
অন্ধকার দেখবে না কিছুতেই।
দুই
বাজারের এই দিকে স্লটার হাউজ
বাজারের ওই দিকে টিম্বার হাউজ
আরেকটু এগুলেই মন্দির চাতালে যূপকাষ্ঠ
তিনটিই মূলত একই কয়েনের মুখে
আঁকা তিন মুখ
অথবা তিন সিলের এক মোহর।
মোহরে দেখেছি প্রতিদিন
লাশের পাশে লাশ
হে গো লাশের পর লাশ
শুয়ে আছে গভীর ঘুমে লাল রক্ত ছড়িয়ে।
আরো আরো একদিন হাঁটতে হাঁটতে
খুঁজে ছিলাম ফাঁসিকাষ্ঠ আর
পেটমোটা বাকানো মোছে তা দেয়া
রক্তচোখের জল্লাদ।
লাল লাল লাল রঙে আঁকা উঁচু লাল দেয়াল
খুব নীচু হয়ে হাতে তুলে দিলো
আইন
আর আইনের ব্যাখ্যা
আর তস্য ব্যাখ্যার ব্যাখ্যা।
তিন
পাতার রঙ কালচে সবুজ পাতার রঙ হলদে সবুজ।
পাতার রঙ ধুলা রঙে ধোঁয়াটে ফ্যাকাশ।
বৃষ্টির জলে লেপাপোছা স্নাত পাতা কেঁপে কেঁপে
বাতাসে কখনো নীল কখনো খয়েরি
কখনো ভেজাচুলের খোঁপায় লাল রঙের গামছা।
বড়গলা ব্লাউজ চুঁয়ে চুঁয়ে জল নামে
দেহ ছুঁয়ে ছুঁয়ে জলের আরামে।
রক্ত মাংসের কোমরে থলথলে মেদ
বৃত্তের চাপের মতো
চিকন মোটা ফর্সা মেদের পর মেদের ভাঁজ;
মাংসল পাছার সাথে যখন যৌথ কোরাস গায়
তখন আমিই শ্রোতা
আমিই দর্শক।
ঠোঁটটিপে হাসে শুধু পাতা রঙে আঁকা গিন্নী
পাতার চোপা যেমন আছে তেমনি খোঁপাও।
প্রতিদিন ভোরে এমনই দেখি
এমনই দেখি
আর চোখের আরাম খুঁজি
আহা! পাতার কত রঙ কত বাহার।
Leave a reply