ভাষাহীন অন্ধের গান
১
শুকনো পাতার দৃষ্টি আমাদের অবমাননার মতো
সে যেন রোদের দিকে পিঠ করে বসে আছে অনন্ত সময়
জাগাতে পারিনি বলে উত্তেজনা নতমুখ শিরদাঁড়াটির
বাতাসের ঋজুপাঠে আরো আরো জল ঢালি বিবশ চারাতে
২
পড়েছি পাতার ছবি
কেটে ফেলা অতিরিক্ত ঘাস ও কবিতা
তাদের সমাধি ঘেরা পিঁপড়েদের দোলাচল, স্থিতি
পড়েছি সন্তুষ্ট চোখও, কটুবাক্য পাশাপাশি
পোষা বেড়ালের ছানা সমস্ত পাড়াটি ঘুরে
অবেলাতে খেতে এলো গৃহস্থের কাছে
৩
তোমার তীর্থের পথ ভুল মন্ত্রে ভরে গেছে
প্রবাসী বিকেল আর ঈশ্বরচেতনাহীন লাল সূর্য
ডুবে গেল দিগন্তের পারে
চটুল কীর্তনদল, ভাঙা হাসি, এঁটো তালি, ধোঁয়ার গর্জন
সব তুচ্ছ জ্ঞান থেকে দূরে একা করবী ফুটেছে
৪
রিক্ত স্থান ভরে দেবে, সজ্জার এ রীতি পরিচিত
সন্তপ্ত আগাছা তাই বৃদ্ধি পায়। মাটির গভীরে
তখনও শিকড় তার প্রাপ্তিযোগে আলো হয়ে আছে
এরূপ ধারণা থেকে ক্রমে ফোটে অনিবার্য
বিরহচেতনা, ভাঙা দ্বিপ্রহর, পাখিদের শিস
সদরে গৃহাভিমুখী গাভীদের খুর বেজে ওঠে
৫
দুর্বল পাঠক আমি। পলাতক, স্মৃতিপরায়ণ
নিবিষ্ট আলোর নিচে ভাষাহীন, অন্ধের গান
পরিত্যক্ত বেদী। তাতে করুণার মতো কুঁড়ি কিছু
ফুটেছে। ঘাসের প্রতি একনিষ্ঠ শ্বাপদেরা ফিরে
গেলে কেঁপে ওঠে তার অনুশোচনার ডানা। ভাবি
ওড়াবার কথা। ভাবি তোমাকে আকৃষ্ট আর করব না
বলেই কি ফড়িংয়ের মতো এই উড়ে যেতে চাওয়া
Leave a reply