চন্দ্রাহত
মরা নদী গুটিয়ে আছে অনতিদূর
ফেরি নেই; থিতিয়ে পড়েছে কোলাহল
অথচ ভ্রমণ হতে পারত,
সাবেকি চাঁদ আটকে আছে সেই কবে থেকে
যেন ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ।
অন্তঃসারশূন্য ছায়া হেঁটে যায়
কে পেরিয়ে আসে নিশুতিমাঠ ক্লান্ত পায়ে?
ঘুম ভেঙে যায়।
চন্দ্রাহত; হয়তো প্রেমিক কোনও
প্রেয়সীর মুখ ভেবে
আঁজলায় ভরে চাঁদের প্রতিবিম্ব
চলে যায় পৃথিবীর ওপারে।
ঈশ্বর ও ভালোবাসা
ঈশ্বর ডেকে যান
তোমাকে, আমাকে
চলে যান অবজ্ঞা কুড়িয়ে।
অন্ধকার দেয়ালে
প্রতিশ্রুতির আঁকড়: সব মিথ্যে
স্বপ্নবিভোর সময় সেও তো ফুরিয়ে যায়,
রাতের বারান্দায় দুলে-ওঠা আলোতে
ভালোবাসতে চেয়ে কারা যেন কেঁদেছিল খুব।
সমর্পণ
বিরাগী গন্ধে নিভে গেল
গৃহস্থের বাতিঘর,
নিখুঁত অন্ধকারে
আমার ভিতর দরজা খুলে যায়।
আতাগাছের তলায়
মৃত নক্ষত্ররা ব্যস্ত হয়ে পড়ে
অনন্তপথ নির্মাণে,
মাথার ওপর পুঞ্জীভূত মৃত্যু।
রাত যত বাড়ে, নগ্ন হয়
আড়বাঁশির সাহানা সুরে
রমণের আলপনা মুছে গেলে
রাধাভাব পেয়ে বসে আমায়
ময়ূররঙের বিষণ্নতার কাছে
সঁপে দিই ক্ষণজন্মা অস্তিত্ব।
শরীর-সভ্যতা
শরীরের হাওয়াকল
শীৎকারে কেঁপে ওঠে,
মেঘের ওড়না সরে যেতেই
নগ্ন চাঁদ; অসম উজ্জ্বল।
দুধসাদা আলোয় নিঃসঙ্গতা- ভ্রমের শরীর,
ভাঙতে থাকে সভ্যতার শেষ অংশটুকু
জেগে ওঠে অতল আঘাত,
অবিশ্রুত স্তননে ফিরে আসে
অশ্বমেধের ঘোড়া গর্জনশীলচল্লিশা পেরিয়ে।
ঘুমের ভিতর
সাতটি ঋষির ভিড়ে আলোর মন্ত্রে
সে এক বিচ্ছুরণ: অপরিমেয়
কৃষ্ণাঙ্গ শরীরের আগল ভেঙে দেয়
যেন স্বপ্নের ভিতর জন্মান্তর – দ্যূতিময়।
আমার হাতে নক্ষত্রখচিত তরবারি
কালপুরুষের, এক শতকের মোহ
অজাতশত্রু হতে চাই,
কুড়িয়ে নেব কাটা হাতের সেলাম
দীর্ঘ পথ সম্পূর্ণ বিরোধীশূন্য,
তবু শিকার হারিয়ে যায়!
শুধু পড়ে আছে মৃতদের ছায়া
প্রচণ্ড ধাতব শব্দে লুকোতে চাই ব্যর্থতা।
Leave a reply