ভাষা
আগুন যখন তার আগ্নেয় রূপের খোঁজে বারবার লাফিয়ে উঠবে
কিংবা বর্গক্ষেত্র বর্গাকৃতি হারিয়ে ফেলার দুঃস্বপ্ন দেখবে
গাছ শব্দটি তখন পল্লবিত হয়ে ওঠে
অন্য কোনও সময়ের আর কোথাও-না-র দুই তুমি
একইসঙ্গে উদয় হও
ভাষার ভিতর কিছু ঢেউ ওঠে
একটি সত্তাকে টেনে এনে
শূন্যতা নিজেকেই মুছে ফেলতে চায়
দরজা
কবে থেকে যেন আমার জীবনের
একটা পাল্লা সর্বদা খোলা
ঝড়-বৃষ্টি-রৌদ্র-জ্যোৎস্নার মতো
ইচ্ছে হলে যে-কেউ ঢুকতে পারে
আমার অর্ধেক খোলা রাত্রির মধ্যে
লুকিয়ে থাকতে পারে দিন
আমার নৈঃশব্দ্যে
স্তূপীকৃত মানুষের কোলাহল
কখনও অনিদ্রার গর্তে
স্বপ্নের সারি এসে ঢোকে পিঁপড়ের মতো
অথচ স্বপ্নের মধ্যেও
এক বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকি
আমার অতিরিক্ত কোনও অস্তিত্ব এখন সেই ঘরে
পথ
তোমার খোঁজে
তুমি শব্দটার মধ্যে কতবার পথ হারিয়ে ফেলেছি
সহজ বা জটিল, গোলকধাঁধা ভারি দরকারি
কেননা পথ না হারালে
অন্য কোথাও পৌঁছোনো যায় না
আর যে পথ ফেলে এসেছি
সে হয়তো নিজেও দিশেহারা হয়ে
উৎসকে আরেক গন্তব্য করে নেয়
তারপর দু-দিকে ছুটে চলে
দেবতা
আমার একজনই দেবতা:
নিরীশ্বর
তাঁর নৈঃশব্দ্যকে শব্দে বদলে দিই
তাঁর না-কিছুকে সবকিছু
মাঝেমধ্যে আমার দেবতা মরে যায়
তখন এক-মাইল ভাষা হারিয়ে ফেলি
এখানে
একটি এখানে খুঁজে নিয়ে
তার সব দরজা-জানলা খুলে দিই
আর দেখি –
কোনও মুখের গোধূলি আভা
আধখানা চাঁদ
ঘুমন্ত আঁশবটি
বিষণ্ণ দেবতা
কুয়াশায় মোড়া নিশ্চল নদী
ভাঙা আয়নার টুকরো
একটি মাত্র আতঙ্কিত হৃৎধ্বনি
মুদ্রার মতো দু-পিঠ কিছু খুচরো সত্য
জগৎ থিতু হয়েছে এখানে
আর সর্বত্র গতিশীল
এখানেই নিজের সঙ্গে শেষ দেখা
Add comment