মায়াপর্ব
১
চোখের তামাটে স্বাদ; দুপুরে শবর সেজে ঘুরি।
শিকার মাংসের নাদ। ঘরের রমণী খুশি হয়।
সে রাঁধে হরির বোল, আমিও উনুনে ঢুকি। পুড়ি।
তনয় ভাতের সাথে মেখে ফেলে শেষ বরাভয়।
এখন সবার পেট আমার হাড়ের গুঁড়ো নাড়ে।
পিচ্ছিল মনের গতি; ঘুরে মরি রতিসুখসারে।
২
বিষ ছিল। কামড়ের জাদুটোনা মনে আছে আর?
এখানে সাপের ভয় মানুষেরা কখনও বোঝেনি।
পড়ো হে, মনসাকাব্য! ধুনি জ্বালো, ধোঁয়াই খাবার।
আস্তে আস্তে দেহ নীল, শ্বাসবায়ু এখনও ঘোচেনি।
যদি বা মরেও যাই, দেহ থেকে খোলস ছাড়িয়ে,
দিও সেই নাগিনীকে যে রয়েছে ফণাটি বাড়িয়ে।
৩
ক্ষমা করো, হাহুতাশ। ক্ষমা করো হাড়ের খোলস।
পিতাকে পুড়িয়ে একা বসে আছি শ্মশানদুয়ারে।
ঠিকুজি ভজন গায়, গেয়ে ওঠে কালসর্পদোষ।
ডোমের পেটেও দাহ, মদ গিয়ে চিতাকাঠ নাড়ে।
ভাঙা শাঁখা মরা চাঁদ, লেগে আছে কোণের আকাশে।
বাবার রমণক্লান্তি প্রাচীন মায়ের চোখে ভাসে।
৪
আবার শস্যের স্রোত। মাটিকে কি সাধে ভালো লাগে?
রেখো মা চাষারে মনে, গোলা ভ’রে রেখো ধানে ধানে।
কুপিয়ে যতেক খুন হয়ে গেছে রাগে, অনুরাগে,
সেসব বৎসর অন্তে উড়ে চলে গেছে মেঘপানে।
বিধিবদ্ধ নির্বাচন, বিধি বুড়ো ক্ষমতার বামা।
আবার কুপিয়ে খুন। ভগবান ওকালতনামা।
৫
স্বভাবে প্রবল জল, অভাবে তা মৃদু হয়ে যায়।
যে ছেলে আমার কাঁধে এতকাল ঘুমায় তূণীরে,
রাতে তার ফলা এসে ঠিক গেঁথে যাবে পাঁজরায়।
রমণী লাজুক হেসে চুমু দেবে বাছাটির শিরে।
আবার মাংসের ভোজ। গূঢ় মশলায় মাখা শিরা।
আমাকেই খেয়ে চুষে ‘আহা!’ বলছে… হিতাকাঙ্ক্ষীরা।
Leave a reply