অন্ধরাত
ছিন্ন ঝিনুক, নীল চোখে আড়াল করেছে ঢেউ
জ্বলতে জ্বলতে আলো হয়ে ওঠে শ্মশানের পথ
জ্বলতে জ্বলতে আলো হয়ে ওঠে শ্মশানের পথ
মৃত মানুষীর অশ্রুতে ভেজা
অন্ধরাত, দূরে, ভাবে সব স্বপ্নের কথা
আদর
জল হয়ে এসেছি কাছে। এই হ্রদে, কুলকুচি স্নান সেরে তুমি
চুল খুলে দাঁড়ালে নিভাঁজ। আয়নায় রমণীয়
মুদ্রিত হলে। আর, নিজেরই পিছন ফিরে রাংতা ও ক্রিমে
বর্ণবদল করে নেমে গেলে যুবাদের তুরীয় গেলাসে
আবরণ আরও যদি উন্মোচিত হত, গহন
নগ্ন হতে তুমি, দেখা যেত, জিহ্বা জরুল রক্তমাংসে
তোমার নির্জনতা ছেয়ে জলের চুম্বন আর ধারাল দাঁতের
অতি গূঢ় কারুকাজ
জলদেবী
বুনোঘাস পেরিয়ে যাই। বৃক্ষ ঘন হয়। সরু ফাঁকে
শরীর গলানো দায়। ভাবতে ভাবতে এসেছি যে
হরিৎ শস্যমুখ—মনে পড়ে না। শুধু
বেলা যত বাড়ে জেদ বেড়ে যায়
জলদেবি, ফিরিয়ে দেবে না আজ হারানো কুঠার?
পাতায় কী সংবাদ দাও! ডালে ডালে! গুঞ্জনে
শিহরিত হই। নিষিদ্ধ বনের হাওয়ায় হাওয়ায়
অনুপল, গোপনে যে স্পর্শ ফোটে—সেই তুমি
আয়োজন টের পাই কুহু ও কেকায়
রাঙামূলো
জন্ম ছিল বনসৃজনের আলো। তবু, আলো চোখে
প্রবিষ্ট হয় নাই, বনভূমি উন্মীলিত হয় নাই কাঁকুরে মাটির সাথে
ভাবি রাঙামূলো, ভাবি করাতকলের কথা
উপকূলে বিগত রাত্রির দাগ মুছে মুছে দিতে ছুটে আসি লহরীমাদল
এই শেষ বার। ঝাঁপ দিয়ে জানু ছিন্ন হল—
একটি বালিকা আজ ভিক্ষা মাগি পড়শির কাছে
আমি তাকে শেখাব ঝুমুর, কৃষ্ণগান
আয়নায় ধরে রাখি লাল মরীচিকা
শিখণ্ডী
সাদা রাত্রি তার নিটোল বক্ষ ছুঁয়ে
পায়ে পায়ে হলুদ নূপুর
তুমি শিখণ্ডী— ভেসে এলে ঘোর অবোধ তন্ময়ে
আলোহীন বেজে ওঠে সে অশ্বখুর
4 comments on “কবিতা : সুব্রত পাল”
Unknown
বেশ ভালো
ছায়ারোদ
কবি সুব্রত পালের কবিতায় লাল মাটির ভিতরে মিথের আলো।
Arghya
কাব্যমুর্ছনা মুগ্ধ করল। কবিতায় খেলা করে বাণী।
Shirsha Mondal
অনবদ্য।