পাহাড়ের পথে
১০
গিটার হাতে হেঁটে যায় এক গান-পাগল পাহাড়ের পথে
বাঁকিভঞ্জন থেকে সান্দাকফু…
পথের দুধারে গানের বীজ রোপন করে দেয়
ঠান্ডা বাতাস আর তুষারপাতের ভেতর আমি তার স্বরলিপি তৈরি করে ফেলি
গলা ছেড়ে গেয়ে উঠি পাহাড়ের গান
শান্ত মেয়ের মতোই পাইনের বন আমাদের উপহার দেয় গানের এক নতুন আশ্রম…
১১
চাঁদ ছুঁয়ে দেখবো বলে বেরিয়েছি পথের নির্জনতায়
টুমলিঙের রাত আদর করলো আমায়
এরকম জ্যোৎস্না আগে দেখিনি কখনো
ছোটবেলায় বাবার সাথে ছাদেই শুয়ে থাকতাম রাতের পর রাত
পূর্ণিমা-অমাবস্যা কবিতার মতোই ছিল
চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙে উছলে পড়ত আলো
আমাদের বাড়িতে
কাব্যলক্ষ্মী সেসব রাতে ঘুরে বেড়াতো বাড়ির আনাচে-কানাচে
দোতলার ভাঙা বারান্দায় আঁচল পেতে শুয়ে থাকতেন মা-যেন কোনো উপন্যাসের পাতা
আজ পূর্ণিমা রাতে আমার প্রিয় টুমলিং
পড়ে শোনাচ্ছে ফেলে আসা সেই বাড়ির উঠোনে- বারান্দায় ভেসে থাকা চাঁদের কাব্য।
১২
ডেফনি, রঙিন এক ফুল
পাহাড়ি নির্জনতায় আমাদের অভ্যর্থনা জানাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে যেন
ফুলকে সঙ্গী করেই কত ছবি, কত অসুখ ভুলে থাকা
আমাদের ক্লান্তি উপর সে যেন ছড়িয়ে দিল সমর সেনের কুসুমের মাস
পৃথিবীর পথে পথে অজানা এক জীবাণুর ভয়
অথচ ডেফনি দুলে দুলে পড়ে চলেছে সবুজ পাহাড়ের মহাকবিতা
হে মহাকবিতা, তুমি আমাকে নিয়ে চলো মহাশূন্যে…
১৩
একটা ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি
ব্যাগভর্তি সাদা পাতা, কিছু রং
অনেকটা পথ হেঁটে যেতে হবে…
সবুজ অরণ্য পেরিয়ে বরফের চূড়া
ঘর সামলাবে বৌ
মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দেবে
আমি যে শব্দশ্রমিক
কবিতার ভাষা খুঁজে চলি পাহাড়ময়
দোলের রাতে সাদাপাতা ভরে উঠবেই শব্দমায়ায়।
3 comments on “কবিতা : অমৃতাভ দে”
ছায়ারোদ
কবি অমৃতাভ দে জ্যোৎস্নাফুলে এই জীবনের ভাষা খুঁজেছেন পাহাড়ময়।
Unknown
❤
Unknown
খুব ভালো লাগল। এক একটি কবিতা যেন চাঁদের আলো দিয়ে ধোয়া রুপোলি ছবি ! যাত্রাপথের সঙ্গী করে নিয়ে গেল !