টিয়া
আমি যদি হতাম তোতা পাখি
বসতে পেতাম তোমার বুকের দাঁড়ে
টিয়ার মতোই ঠোঁটও হত লাল
চুমু খেতাম ঠোঁটের নদীর পাড়ে
রক্তারক্তি হতে দিতাম না তো
পক্ষীচঞ্চু কম্র হত সুখে
দুপুরভর সবুজ আমলকী
নম্র হত, নম্র হত বুকে
চমকে উঠে বলতে তুমি, এ কী
অসভ্যতার শেষ বুঝি নেই কোথাও
আমি বলতাম, এ অমানুষিক
তাকিয়ে দেখ দায়ী তোমার তোতা
শাস্তি দেবার সময় তো ঢের পাবে
ওই মুখে কি গালিগালাজ সাজে?
উপুড়চুপুড় বিড়ম্বনার মাঝে
তোমার বুকে তিরতিরে সুখ বাজে।
গুপ্ত বর্ণালি
তোমার মননে ও
সোনালি জঙ্ঘায়
গুপ্ত বর্ণালি,
নাচের মুদ্রায়
তাকে তো দেখা যাবে।
গ্রীষ্মে দামোদর
রুপোর সুতো, তার
দগ্ধ বালুচর
একদা বর্ষার
বিপুলা বিদ্রোহে
ভরবে বন্যার
পরমা সমারোহে।
তোমার পুরুষ্টু ঊরু
তোমার পুরুষ্টু ঊরু
যা আমাকে উৎপীড়ন করে
একটি আরেকটির উপর বিন্যস্ত
নৃশংসতা তোমার শরীর
থেকে উঠে আসে
সান্দ্রতম রাতে
আনন্দিত নিতম্বের আন্দোলনে
উন্মথিত সুখে।
সামান্য বর্ষণ
বৈশাখীর সামান্য বর্ষণে
অজানা অরণ্যলতা ফণা তোলে বনে
ফোটে বনফুল
শ্যামলা মেয়ের ছোটো দুল
পাখপাখালির কাকলিতে
বনভূমি স্বরাট সংগীতে
ক্রমে পাক ধরেছে পিয়ালে
দুটি টিয়া বসে মগডালে
তাদের ঠোঁটের রং লাল
তোমার ওষ্ঠেও কবে ফুটবে সকাল?
প্রতিচ্ছবি
শিরীষ গাছের আড়াল থেকে চাঁদ
মঞ্জরিত স্বচ্ছ বাসনায়
প্রাত্যহিকের ঢেকে আর্তনাদ
ঢলোঢলো দিঘির বুকে চায়
কী দেখেছ দিঘির বুকে, কবি?
শাপলাকলির একলা ফুটে ওঠা
নাকি নেহাৎ নিজের প্রতিচ্ছবি
ভেঙে যাচ্ছে — হয়েও উঠছে গোটা।
One comment on “কবিতা : রজতকান্তি সিংহচৌধুরী”
dishari mukhopadhyay
গুপ্ত বর্ণালীময় কবিতাগুলো সুন্দর !