সৌন্দর্যতত্ত্ব
তোমার অপরুপবাদত্ত্ব পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা হতে দেবো না কখনোই
যেনো আমারও অধিকার আছে জলে ও নিষ্ফলে
এক প্রচন্ড বাতাস এসে উড়িয়ে নিয়ে যাবে আমাদের
ছাড় পাবে না তুমিও হে রাজন
উড়ে যাবো এক নতুন গোলকে
যেখানে তোমার আমার স্পর্শের মধ্যে থাকবে
সামান্য খাদ্যের অধিকার
আর
নির্জনে বসে থাকা দূর সীমান্তে চেয়ে
আবেদনপত্র
ভাবনার আড়ালে দিন যাপনের গল্প জেগে আছে। একফালি পৃথিবী রুষ্ট হয় নি আজও। একটা ঝোপের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার দিন আজ। ভোরের ধ্যান মগ্ন স্তব্ধ কোলাহলের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা চাই। তুমি এসেছ! হে সবুজ হে ভালো পাহাড়ে পাহাড় আমাকে নিয়ে যাও। আমার ঔদ্ধত্য আজ তোমার করতলে বিসর্জন দেবো। হে নির্দয় আমাকে কাঁদাও সর্বসান্ত করে দাও আমায়।
ইচ্ছে হলে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিতে পারো। একবুক মেঘলা আকাশের গায়ে গা লাগিয়ে কপাল চাপড়াই। হে বৃক্ষনাথ আমার প্রিয়জনকে দেখিয়ে দিও না আমার স্বরুপ। আমি বড়ই লজ্জিত। মুখ দেখানোর মতো কিছুই নেই আমার।
তবু এই বনপ্রান্তে দুখঃসুখের চিরকালীন আবেদন ;
একটা ছোট্ট গাছের পাতা করে দাও আমায়।
তুচ্ছ মানুষ হয়ে তোমার সাথে আলাপ হওয়ার সব রাস্তাই আজ বন্ধ হয়ে গেছে।
বারোটা বাজতে দুই
বারোটা বাজতে আর মাত্র দুমিনিট বাকী। আর দুমিনিটে শেষ হয়ে যাবে দুনিয়াটা। শেষ হয়ে যাবে আদরের সন্তান। তার আগে শেষ কবিতা লিখে যেতে চাই। আজ জল ভরে রাখতে হবে গামলায়। শেষ মূহুর্তে কিছু মানুষ জলের জন্য হাপিত্যেশ করবে। এতদিনে মাত্র তিনটে গাছ লাগিয়েছি। দুটো বড়ো হয়ে গেছে, একটা আম গাছ এখনও ডানা মেলতে পারেনি। এই বিপুল মানুষের বুকে তারা অক্সিজেন দিতে পারবেনা। তারা নির্বাক নিস্তব্ধ। বড়ো মুষরে পরেছে আজ। আমাকে অবিরাম দোষারোপ করছে। মুখ তুলে কথা বলতে বারণ করেছে। কান পাতলে শুনতে পাচ্ছি মাটি চাপা জলের আর্তনাদ। কি ভীষণ হাহাকার তাদের। একটু একটু করে মাথার ভিতরে গাছের শিকড় ঢুকে যাচ্ছে। আমি অ্যালুমিনিয়ামের তার পাওয়ার নেশায়, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে উন্মত্ত হয়ে ভেঙেছি পাখির বাসা। ইঁদুরের লেজে সুতো বেঁধে ত্রিভুবন দেখিয়েছি। একটা একটা করে ফড়িংয়ের পাখনা ছিঁড়েছি। উপভোগ করেছি তার ল্যাংড়ানো।
শেষ করে দেওয়ার খেলায় আমিই প্রথম।
আমি পুরস্কার পাবো। তোমরা একটু প্রচার করো।
শেষের সেদিন আমি পুরস্কার আনতে যাবো।
হাততালি দিয়ে উৎসাহিত কোরো আমায়
আদাব
এখনই তোমাকে কাঁদানোর সময়। জানি তোমার চোখের জলে আমার লিকলিকে আম গাছে নতুন পাতা জন্মাবে। সেই ভোর রাত থেকে আমার অবাধ্যতা সহ্য করতে হয়েছে তোমাকে। আমার অসহ্য জীবনের নৌকা ডুবে যাচ্ছে। জলের ইতিহাস সহজ কথায় লিখে রেখে যাবো। গাছের অস্বাভাবিক মৃত্যু লিখে রেখে যাবো। অর্থহীন এইসব প্রলাপ বুকে মতবিরোধ তীব্র হবে। শিশু মৃত্যুর পরিসংখ্যান পালকের মতো সুড়সুড়ি দেবে মুখে। একদিন তোমার টাকার বাগানে মৃত শিশুর স্তুপ দেখে, একটু গা শিরশির করে উঠবে। আজ ঝড় উঠতে পারে। খাবার চেয়ে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন হতে পারে। সত্তর বছর ধরে দেখছি ক্ষুধার্ত শিশুর বুকে দাড়িয়ে পালোয়ান প্রধানমন্ত্রী। হে প্রধানমন্ত্রী আমার সহনাগরীক বুদ্ধিমান এবং বোকাচোদা টাকার মালিক। আদাব জানাই তোমাদের।
বৃক্ষমানব
গাছের সাথে রক্তমাংসের বন্ধু আলাদা করা গেল না। এই প্রবল গরমে বন্ধু-কুয়াশা গায়ে মেখে নেওয়া যায়। একা চিঠি ইথার তরঙ্গে, ওরে মেঘদূত ওরে প্রাণ হন্তারক ভাসানোর আগে ভাবো। ভেবে ভেবে নতুন নাম দেওয়া চাই। নাম ঘোষনার আগেই সাদা ধবধবে পাতায় রঙচঙে পুরস্কার। কে হাততালি দেবে আজ! জলের বুকের থেকে শ্যাওলা আলগা হয়ে যাবে! জানি বুকের নোনাজল ক্রমশ ধারালো হচ্ছে। গুছিয়ে বলতে শেখার আগেই পরোতে পরোতে সাজিয়ে রেখেছো প্রত্যাশা পুরনের আশ্চর্য চাবি। ছলে বলে খুলে দাও জাগতিক দরজা অসীম। পাতায় পাতায় পড়ে থাকি আমি, আর তুমি আশ্চর্য অকারণ সাহসী মেজাজ। আর সব অশরীরী প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী নাম। যেখানে দশ লক্ষ প্রাণের আকুতি আমাদের নাম ধরে ডাকে! গুছিয়ে বলেনি সাজাতে জানে না। জানে না অদৃশ্য প্যাচ পয়জার। দানবীয় ভালোবাসা এলোমেলো ছরানো ছিটানো সমবায় সরল সমিতি। পন্ডিতগন এসবের কিছুই বোঝেনা। গোছা গোছা বই নিয়ে থম মেরে থাকে আর উই ধরে মাথায় তাহার।
আমরা আক্রান্ত হই জংলী ফুলের গন্ধে কমল বাবুর বাসার আশায়।
Leave a reply