দেবী
নিরঞ্জনের কিনারা ঘেঁষে রোগা এক একলা বাঘিনী
রঙের ধারাটি বয়ে যায়, কোলকুঁজো। ধুয়ে যাচ্ছে মাটি
উড়ে যাচ্ছে পরানদোতরা। প্রাণপ্রতিষ্ঠার পরে যা বলেছিলেন দেবী
ধান্য পুষ্প আর দুগ্ধবতী গাভীকুল – অথই গেরস্তি
সরিয়ে রেখেছে কবি তার উপমা-তূণীর, ব্যাসকূট
দেবীর চোখের জল — শুধু এক নদী পাতা আছে
আগুন
ঘন্টা বাজে গুমঘরে চামড়ার তালবাদ্য
হাড় মুখে তুলে নিয়ে উড়ে যায় প্রমিত শকুন
আজ কি ছুটির দিন তুরপুনে বিঁধে যায়
নিঃসঙ্গ বেলুন এক চুপসে রয়েছে একা একা
এ পাহাড়ে খুলিগুহা এ কঙ্কাল বালুকালাঞ্ছিত
ছাই জমে চরাচরে, অগ্নিবর্ণ গাছটির মন
চণ্ডস্বর
পত্রমোচনের দিন প্রমত্ত শিখাটি তবে জ্বেলে দিই
লবঙ্গ বনের মাঝে সে এক মন্দির, পাশে তার অগাধ দীর্ঘিকা
জলের ভেতরে ওই কার মুখ দেখি আমি
আমি কি মাংসভুক আমি কি নিজেই কেটেছি এই শিরা
করতলে এত রক্ত এত এত হায়নার ডাক
চণ্ডস্বর বেজে বেজে একা একাই পাক খাচ্ছে নিহিত সুড়ঙ্গে
বরাহ-অবতার
ভাঙো জরা ভাঙো জন্ম এই সুড়ঙ্গ আদিমাতৃকা
গভীর টানেল জুড়ে স্ট্যালাকটাইট, নুন-গাছ
নামিয়ে রেখেছে ঝুরি প্রেত আর প্রেতিনীর মেটিং সিজন
ধুনি জ্বেলে অপেক্ষার পরপারে লব্ধ জন্মসূত্র
গুঁড়ি মেরে আসে চিতাবাঘ
ধায় শব্দ ধায় বজ্র জেগে উঠছেন বরাহ-অবতার
বালুকাময় হাত
চতুর্মুখে ছুটছে আগুন; মুণ্ড নিয়ে লোফালুফি খেলা
সমুদ্র-চামড়া ছিঁড়ে উঠে আসে কমলে-কামিনী
ওলো তোরা শাঁখ বাজা উলুধ্বনিতে ভিজে যাক পাড়া
সতীচ্ছেদ ছিন্ন আজ নতমুখে বসেছে ধরণি
নম যন্ত্র নম যন্ত্র পণ্যবিলাসী এক হাঁক দিয়ে যায়
আমার পূজার থালা উপচে উঠছে রক্ত মজ্জা হাড়ে
ভেতরে বাহিরে শুধু কড়া নাড়ে একটি বালুকাময় হাত
2 comments on “কবিতা : সৌমনা দাশগুপ্ত”
Sampa
পুরোটাই খুব ভালো লাগল তবে চণ্ডস্বর মারাত্মক রকম ভালো লেগেছে।
SOUMANA DASGUPTA.
প্রীতি জানাই