আমি যে মাংস খাই না
সে খবর ছাপার সুযোগই পেল না
বড় বড় কাগজগুলো
আড়াল থেকে একদিন
চাঁদের সর্বাঙ্গের প্রতিবিম্ব পড়েছিল আমার চোখে
সে খবর জানতে পারেনি টিভি চ্যানেলগুলো
বিজ্ঞাপনের টাকা সামলে উঠতে পারবে না
যদি জানতে পারে
অন্যান্য যৌনাঙ্গময় প্রাণীগুলোর মতই
একটা শরীরের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও
জীবনের রস , রহস্য ও সত্যকে অস্বীকার করে
ঈশ্বর হয়ে উঠতে চায় কোনো কোনো মহাপুরুষ
জলকে মলিন না করে
নিজের হাতের নোংরা হাতেই রেখেছি
তবুও আমাকে কেউ প্রেমিক বলে না
মাঝেমাঝে অপরাধ করি
মাঝেমাঝে অপরাধ না করলে
রাধ্-এ আমার মন বসে না
অপরাধ বলতে আমি
কেবল চুরি করতে পারি
সবকিছু , হীরে থেকে জীরে, চুরিতে
আমার রুচি নেই
তুমি চেয়েছিলে চুরি যেতে
তাই গোপন রয়েছ
যাকিছু গোপন থাকে , তাকে সেখানেই রেখে
চুরি করে নিয়ে আসি সেটাই
ধনের মালিক ,যা নিয়ে সে ধনী ,ধনীই থেকে যায়
মাঝ থেকে আমিও একটু রাজা হয়ে উঠি
লক্ষ্মী যার ঘটে ছিল
সে দেখে ঘট যথাযথ
সন্দেহের বশে যদি পুলিশেও যায়
এসে দেখে
কৃষ্ণ নয় , কালীতে মজেছে এক পাগলের রাধ্
মাঝেমাঝে অপরাধ করি
শল্যে নয় যদি মনে হতে
তুমি একজন ভালো শল্য চিকিৎসক
ধন্য ধন্য করে লোকে
কাটলে ছাঁটলে , কখনো কারো , হয়তো
উপকার হয় , আরোগ্য হয়
তবু , তোমাকে আমার , একজন খুনির খুব
ঘনিষ্ঠ মনে হয়
লোকে যখন এত প্রশংসা করে , আজ
বুঝছি , তারা ঠিকই করে নিশ্চয়
স্বয়ং সময়ও এখন ,গোটা পৃথিবীটাকে,টেবিলে রেখে
কাটাছেঁড়া করছে , ইচ্ছে মত
মুখবুজে তাই , সব মেনে নিই , শুধু
মৃদু প্রতিবাদ মনের ভেতরে এখনো উদ্ভিদ
যদি তুমি শল্য চিকিৎসক না হয়ে মনোবিদ হতে
বেশ হত , অন্তত আমার কাছে
আত্মহত্যার সময়
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে কোথায় এসে পড়েছি
আমি জানি না
এরকম কত লোকেই তো , যুগে যুগে , তাদের
আপন আপন তুমিকে খুঁজেছে
খুঁজতে খুঁজতে , হয়তো না পেয়ে , জীবনচক্র
শেষ হয়ে গেছে
আমিও সেরকমই একটা পুনরাবৃত্তি মাত্র
একটা রাস্তা থেকে হয়তো দুটো কিংবা তিনটে
নতুন রাস্তা বেরোয়
তার থেকে আরও আরও
এঘর থেকে ওঘর
মাঝের করিডোরটুকুও তো রাস্তাই
যেখান দিয়ে তুমি রোজ আত্মহত্যা করতে যাও
এই পুনরাবৃত্তির একঘেয়ে পৃথিবীকে তুমি
ভালোবাসতে পারোনি
এখন আমার এই হারিয়ে যাওয়া পৃথিবীতে
সমস্ত রাস্তার জাল গুটিয়ে নিয়েছে একটা মাকড়সা
প্রায় অস্পষ্ট এক টোটেমের মত
নিজের অনন্ত সুড়ঙ্গের মধ্যে আমি তীব্র অসহায়
তোমার পরবর্তী আত্মহত্যার সময় হয়ে এলো
চাঁদ লুকিয়ে পড়ল পাতার আড়ালে
হয়তো অজানা
তুমি হয়তো জান না –
(জানবার বা জানাবার সুযোগ ছিল না বলে )
এতদিন ধরে আমি তোমাকে কেবল দোষারোপ করে গেছি
দোকানে দোকানে , পুরনো বছরের , যেসব ডায়েরিগুলো
বিক্রি হয়নি , হবেও না কখনো
সংগ্রহ করলে দেখতে পাবে
আমার সমস্ত যন্ত্রণা সেখানে লেখা আছে
এখন মৃত্যু এসে নতজানু হয়ে আমার সামনে বসেছে
তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করার জন্য আবেদন করছে
মেনে নেব মনস্থ করেছি
শুভযাত্রার মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগে মনে হচ্ছে
তোমার যন্ত্রণার কথা হয়তো লুকিয়ে আছে
সেইসব বাঁশিগুলোর বুকে
তুমি আমি বাজাবার আগেই যেগুলো
পুড়ে সুর হয়েছে আগুনে
তুমি হয়তো জান না
হয়তো আমিও জানি না
এক সম্পূর্ণ অজানা মানুষের মধ্যেই আমরা
পরস্পরকে আঘ্রাণ করেছি
Leave a reply